দ্রুত ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। সেইসঙ্গে বাড়ছে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ। আর এই সংকট থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ও বনভূমি রক্ষায় অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে এস্তোনিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। বনায়নে বিনিয়োগ করে উপার্জনের দীর্ঘমেয়াদী পথ তৈরি করেছে তারা।
বলা হয় টাকা গাছে ধরে না। যদি বলি, বর্তমান বিশ্বে এ কথা ভুল- তাহলে কি অবাক হবেন? অবাক হওয়ার কিছুই নেই, উত্তর ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান টাকা গাছে ধরানোর লক্ষ্যেই কাজ করছে। 'সিঙ্গেল ডট আর্থ' নামের সেই প্রতিষ্ঠানজানিয়েছে, বন ও জলাভূমি কিনতে তারা কয়েক কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে। যার মধ্য দিয়ে বাঁচবে প্রাণ, প্রকৃতি। তৈরি হবে দীর্ঘমেয়াদী আয়ের উৎস।
বন ব্যবস্থাপনা ও কার্বন নিঃসরণ ইতোমধ্যেই বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে এস্তোনিয়াতে। তাই দেশটির পরিবেশ রক্ষায় অভিনব এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় এই প্রতিষ্ঠানটি। কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন বনভূমি রক্ষায় অংশ নিতে পারবে, অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান হবে।
সিঙ্গেল ডট আর্থের সিইও মেরিত ভালদসালু বলেন, 'একই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা ও অর্থ আয়ের এই সুন্দর ব্যবস্থাটি বিনিয়োগকারীরা বেশ পছন্দ করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কম হয় এমন পণ্য বিক্রি করে তারা উপার্জন করতে পারবে। আর এইসব পণ্যের বাজার আগামী কয়েক দশকে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এটাও বুঝতে পারবে যে আমাদের বেঁচে থাকাটা প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে। আর তাই প্রকৃতি ও পরিবেশকে আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।'
সিঙ্গেল ডট আর্থের এই প্রকল্প থেকে বিনিয়োগকারীরা পাঁচ শতাংশ বার্ষিক লভ্যাংশ আয় করতে পারবেন।
সিঙ্গেল ডট আর্থের সিইও মেরিত ভালদসালু বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে মুনাফা হবে পাঁচ শতাংশ। এটা প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার মতোই। তাই আমরা এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পটিকে অর্থ উপার্জনের ভালো উপায় হিসেবেই দেখছি। এতে বন ও পরিবেশও সংরক্ষণ হলো, পরিবেশ বান্ধব ব্যবসাও চাঙা হলো।'
এস্তোনিয়ার প্রায় অর্ধেকটা জুড়েই রয়েছে বনাঞ্চল। তবে দ্রুতই তা ধ্বংস হচ্ছে শিল্পায়নের কারণে। ঠিক এমন সংকটের মুহূর্তে সিঙ্গেল ডট আর্থের প্রকল্পটি পরিবেশ রক্ষায় নিয়ে আসবে নতুন সম্ভাবনা।