জর্জ টিমথি ক্লুনি। মার্কিন নাগরিক। বয়স ষাটের কাছাকাছি। একাধারে তিনি অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সমাজকর্মী। অভিনেতা হিসেবে পেয়েছেন তিন তিনবার গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। এছাড়াও কয়েক ডজন পুরস্কার ও সন্মাননা রয়েছে তার ঝুলিতে। ২০০৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনে ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় উঠে এসেছিল তার নাম। ২০০৮ সাল থেকে কাজ করছেন জাতিসংঘের শান্তি দূত হিসেবে।
এতো সব পরিচয়কে পিছনে ফেলে এবার তিনি আলোচনায় উঠে এসেছেন বন্ধুত্বের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এর চেয়ে বন্ধুত্বের নিদর্শন সচরাচর দেখা যায় না। এখন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সারাবিশ্ব।
দীর্ঘ ৭ বছর পর আলোচনায় জর্জ ক্লুনির বন্ধুদের সাহায্যের ঘটনাটি যখন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ক্লুনি নিজেই স্বীকার করেন।
কি ঘটেছিল ৭ বছর আগে? ২০১৩ সাল। আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী আমাল আলামুদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হয় ক্লুনির। যিনি লেবাননে জন্মগ্রহণকারী নারী। আমালের মক্কেল উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, মিশরীয় সাংবাদিক মোহামেদ ফাহমি, নোবেলজয়ী নাদিয়া মুরাদ। ইতালিতে কাজের সূত্রে আলাপ, প্রথম পরিচয়েই প্রেম জমে ক্ষির আমাল ও ক্লুনির।
এদিকে, আলাপকালে আমালকে নিজের ১৪ জন বন্ধুর কথা জানান ক্লুনি। যারা তার বিপদের দিনে পাশে থেকে টাকা পয়সা ও আশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। কিভাবে রাতের পর রাত কাটিয়েছেন বন্ধুর বাড়িতে টানা ৩৫ বছর ধরে। বলতে গেলে ১৪ জন বন্ধুই ক্লুনির পরিবার, আপনজন।
২০১৩ সালেই সুপারহিট হয় তার সৃষ্টিকর্ম গ্রাভিটি। গ্রাভিটি থেকে প্রাপ্ত অর্থ বন্ধুদের দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন ক্লুনি। যেই কথা সেই কাজ। ১০ লক্ষ ডলার ১৪ টি ব্যাগে ভরে পৌছে দেন সেই ১৪ জন বন্ধুর কাছে।
এর আগে ২০১৭ সালে তার ব্যবসায়ী পার্টনার র্যান্ডে গার্বার এই খবর সামনে আনলেও মুখ খোলেনটি জর্জ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানালেন ২০১৩ সালের সেই মহত্বের কথা।
জর্জ ক্লুনির কর্মজীবন সাফল্যগাথা হলেও এতটা সুখকর ছিল না দাম্পত্য জীবন। ১৯৮৯ সালে টালিয়া বালসামকে বিয়ে করলেও সংসার ভাঙে চার বছরের মাথায়। দীর্ঘ ২০ বছরে ডজন খানিক সম্পর্কে জড়ালেও স্থায়ী হয়নি কোনটাই।
সবশেষ ২০১৩ সালে প্রেমে পড়ে ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ৫৪ বছর বয়সে বিয়ে করেন ৩৬ বছরের আমালকে। যমজ সন্তানদের নিয়ে বেশ সুখেই রয়েছেন আমাল-ক্লুনি দম্পতি।
সূত্র: আনন্দবাজার