দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক উপশহর দোহাজারী পৌরসভার সর্বপ্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী সংগঠন ‘আঁধারে আলো’র নবম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (৬ মার্চ) সকালে কক্সবাজারের হোটেল বে-কুইনে বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়।
এ সময় ‘আঁধারে আলো’র সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মুহিম বাদশার সঞ্চালনায় সংগঠনটির সভাপতি মো. ফরহাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা চন্দনাইশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলী হিরু। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা এস এম জামাল উদ্দীন, দোহাজারী পৌরসভা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল শুক্কুর, বিলুপ্ত দোহাজারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বেগ, আলোকিত দোহাজারী ম্যাগাজিন সম্পাদক ও এই সংগঠনের উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল গফুর রাব্বানী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আমীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন মিশুক ও হোটেল বে-কুইন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলী হিরু বলেন, 'এক সময় দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে রক্তের কারণে মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচানো প্রায় অসম্ভব ছিল। কিন্তু বর্তমানে ‘আঁধারে আলো’র মতো অন্যান্য রক্তদানকারী সংগঠনগুলো এগিয়ে আসায় তা এখন অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল শুক্কুর বলেন, 'দুই বছর আগে রোড এক্সিডেন্টে আমি আমার নাতিকে রক্তদানের মাধ্যমে মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে 'আঁধারে আলো'র ভূমিকা ছিল অনবদ্য। এ জন্য আমার পরিবার 'আঁধারে আলো'র প্রতি আজীবন ঋণী থাকবে। তিনি আরও বলেন, 'শুধু আমার পরিবার নয় 'আঁধারে আলো'র সদস্যরা রক্তদানের মাধ্যমে এমন হাজারো পরিবারের মুখে হাসি-ফুটিয়েছেন।'
এ সময় বক্তারা বিগত বছরগুলোতে আঁধারে আলো সদস্যদের যে ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে মুমূর্ষু রোগীদের পাশে ছিল তা যেন অব্যাহত থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেন। আঁধারে আলো ২০১২ সালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ যাবৎ ৪ হাজারেরও বেশি ব্যাগ রক্তদানের মাধ্যমে যেভাবে মানবিক কাজ করে যাচ্ছে সে জন্য দোহাজারীবাসী আজীবন আঁধারে আলো'র প্রতি ঋণী থাকবে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
আলোচনা সভা শেষে ২০২০ সালের ১৭ জন সর্বোচ্চ রক্তদাতাকে ক্রেস্ট প্রদান ও ৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি- ইঞ্জিনিয়ার জসীম উদ্দীন জনি, আলহাজ লোকমান হাকিম, আলহাজ ফয়সাল আল মনচুর, দেলোয়ার হোসেন মিশুককে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল হতে রক্তদানের পাশাপাশি প্রতি বছর শীতবস্ত্র বিতরণ, ইফতারসামগ্রী বিতরণসহ সামাজিক বিভিন্ন কাজে 'আঁধারে আলো'র পাদচারণা রয়েছে।