ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীর ২০১৪ সালের পর থেকে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের প্রধান আইনজীবী। ফিলিস্তিনিরা আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনে অপরাধ তদন্তে আদালতের অধিকার নেই দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ভূমি দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতে জড়িয়ে আসছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন। বিভিন্ন সময়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এখন পর্যন্ত দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
২০১৪ সালের ১৩ জুন এর পর থেকে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেম ও গাজায় সংঘটিত বিভিন্ন সহিংসতায় যুদ্ধাপরাধ হয়েছে কি না তার তদন্ত শুরু করেছে আান্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনে আদালতের অপরাধ তদন্তের অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে রুল জারির পর বুধবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান আইসিসির প্রধান আইনজীবী ফাতৌ বেনসুদা।
তিনি বলেন, সংঘাতে লিপ্ত ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস উভয়পক্ষের যুদ্ধাপরাধে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। এর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচারের আশা করছেন তারা।
ফিলিস্তিনিরা জানান, ইসরাইল ভেবেছিল তারা অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। তাদের অপরাধের জন্য কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি করা হবে না। এ সিদ্ধান্তের কারণে ইসরাইল এখন থেকে অপরাধ করা থেকে বিরত থাকবে আশা করি।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর অত্যাচার ও যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তদন্ত শুরুর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই। এতে করে যারা এত দিন অন্যায়ের শিকার হয়েছেন তারা অন্তত বিচার পাবেন।
তবে আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে ইসরাইলের ওপর আঘাত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা ইহুদিবিদ্বেষ ও কপটতার শমিল। আমাদের সাহসী সেনারা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। আর তারাই মূলত আসল যুদ্ধাপরাধী। ইহুদিদের ওপর নাৎসি বাহিনীর বর্বরতার পুনরাবৃত্তি করার জন্যই আদালত এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছে বলে জানান তিনি।
আইসিসির সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।