এ যেন এক রূপকথার দেশ। যে দেশে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হয় পালাবদল। কখনো অথৈ জলের রাজত্ব, কখনো ধুলোর সাগর, আবার কখনো সবুজের ছড়াছড়ি। তবে বসন্তের এই সময়টাতে রাজার আসন দখল করে নিয়েছে রক্তলাল শিমুল।
সবুজের ডালে ডালে রক্ত লালের নাচন। শিমুলের রাজত্ব ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ। পাহাড়ি নদী যাদুকাটার তীরজুড়ে এখন এমনই রাশি রাশি মুগ্ধতা। রক্তরাঙা শিমুলের বাসন্তী অভিবাদন।
ফাগুনে প্রকৃতির আগুনের এই সূত্রপাত বুঝি তাহিরপুরের শিমুল বাগান থেকেই। রূপের সেই আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। পুড়িয়েছে হাজারও সৌন্দর্য পিপাসুর মন। গাছভর্তি ফুলের কোনও সৌরভ না থাকলেও মায়ায় কমতি নেই। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষগুলো যেন সেই মায়ার জালেই বন্দি।
শিমুল বাগানে বেড়াতে আসা লোকজন বলছেন, এতেগুলো শিমুল গাছ তারা আগে কখনোই দেখেনি। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে এসে ভালো সময় কাটাচ্ছেন বলেও জানান অনেকে।
মাথার ওপরে ফুটে থাকা ফুল ঝড়ে পড়ে লাল গালিচা হয়ে। অতিথিদের স্বাগত জানায় অপার সৌন্দর্যের সাম্রাজ্যে। একটু খেয়াল করলেই ডালে ডালে দেখা মিলবে মধু খেতে আসা বুলবুলি, কাঠশালিক আর হলদে পাখির।
সৌন্দর্যের এই স্বর্গরাজ্যের শুরুটা আজ থেকে ১৮ বছর আগে। ২০০৩ সালে উপজেলার বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন পতিত জমিতে গড়ে তুলেন এই শিমুল বাগান। তিনি না থাকলেও থেমে নেই সৌন্দর্য প্রিয় মানুষটির স্বপ্ন।
সময়ের স্রোতে একদিন বসন্ত ফুরাবে তবে তাহিরপুরের রূপে ভাটা পড়বে না এতোটুকু। নীলাদ্রি লেক, বারিক্কা টিলা, টাঙ্গুয়ার হাওর, মেঘালয়ের পাহাড় আর সেই পাহাড় বেয়ে নেমে আসা যাদুকাটা নদীর যাদুর টান রয়ে যাবে বছর জুড়েই।