চাহিদামতো তৎক্ষণাৎ সেবাগ্রহীতাকে সেবা প্রদান করার সক্ষমতা অর্জনের নামই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এ ক্ষেত্রে দেশের সব খাতকে ব্যাংকিং খাতের দ্রুত সেবা দেয়ার যোগ্যতা তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন বক্তারা।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ এর সম্মেলনকক্ষে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব-বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ বিষয়ক এক সেমিনারে এসব বলেন প্রকৌশলী মাহফুজুল ইসলাম।
প্রবন্ধ উপস্থাপনে তিনি বলেন, হাইটেক পার্কসহ বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সফল হতে কাজ শুরু করেছে।
বর্তমানকে পরিবর্তন করে নতুনত্ব নিয়ে আসাই হলো আগামীর শিল্পবিপ্লব জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আমাদের কর্মসংস্থানকে কার্যকর করতে হলে গবেষণা প্রয়োজন। যে কোনো খাতে কতজন গ্র্যাজুয়েট দরকার, বাকিরা কী করবে, কোন বিষয়ে পড়বে এটাও জানা জরুরি।
এ ছাড়া শিক্ষা খাত ইন্টারনেটভিত্তিক হতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য বেশি থাকতে হবে নতুন তৈরির চেষ্টা আর সেক্ষেত্রে শিল্প খাতে গুরুত্ব দিতে হবে বলেও জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী ড. মিজানুর রহমান বলেন, দেশে ইন্টেলিজেন্স ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু হলে সড়ক দুর্ঘটনা জিরোতে চলে আসবে। যদিও এর জন্য রোড অবকাঠামো প্রয়োজন হবে। ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে মহাসড়কের টোল পয়েন্টগুলো ডিজিটালে গুরুত্ব দেয়া। এতে যানজট কমে আসবে বলে মনে করেন তারা।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে সফল হতে হলে পরিবেশ ও সমসাময়িক বিশ্বের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে জানিয়ে বুয়েট প্রকৌশলী সাইফুল আমিন বলেন, সব সেক্টরের সঙ্গে সবার যুক্ত হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের কারণে টেকনোলজি ডিপ্লোম্যাসি এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও দেশকে উন্নত দেশে এগিয়ে নিতে সরকারের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়ের আহমেদ পলক বলেন, সামনে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অটোমেশনের ফলে আগামীতে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য দক্ষ জনবলের বিকল্প নেই। এরই লক্ষে হাইটেক পার্ক নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ চলছে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, অর্থনীতি সব খাতেই আইসিটিকে ব্যবহার করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বড় বড় দ্বীপগুলোতে সাবমেরিন ক্যাবল ও সোলার ব্যবহারের মাধ্যমে চলতি বছরেই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে। ২০৪০ সালে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কী হবে সরকার তা নিয়ে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ধরন একেক দেশে একেক রকম। এ জন্য সফলতার জন্য আমাদেরই পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ওপর সীমাবদ্ধ নয়। কৃষিকে বাদ দিয়ে পরবর্তী শিল্পবিপ্লব নয়, নতুন ক্ষেত্র নিয়ে এগিয়ে যাবে। আইসিটি এবং পোস্ট ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ যেভাবে কাজ করছে তা চতুর্থ ও পরবর্তী যে কোনো বিপ্লবের জন্য ডিজিটাল কানেক্টিভিটি তৈরি করেছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের পোস্ট অফিসগুলোতে ডিজিটাল সেবা দেয়ার বিষয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।
আইবি প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের প্রকৌশলীরা অংশ নেন।