এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য জার্মানি রিভলবার ও গুলি সংগ্রহ করেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী রুবেল (৩৩)।
গ্রেফতারের পর রুবেলের সঙ্গে গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য জাপা নেতা ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর ঘনিষ্ঠতার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
পুলিশ জানায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চলের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করেন বলে আদালতে জবানবন্দি দেন।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রুবেলকে তার নিজ বাড়ি থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়। আটকের পর তার বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হলে গাইবান্ধা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উপেন্দ্রনাথের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রুবেল।
গোলাম রব্বানী রুবেল শান্তিরাম ইউনিয়নের মধ্য পরান কালিতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। সুন্দরগঞ্জের বিএনপি নেতা এক কুড়ি মামলার আসামি মাহবুব ইসলামের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ রুবেলকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, অস্ত্রটির গায়ে জার্মানি শব্দ লেখা আছে। অস্ত্র ও গুলি ৬ রাউন্ড জব্দ করা হয়েছে। কেন, কী উদ্দেশ্যে তিনি অস্ত্রটি সংগ্রহ করেন তা আদালতে স্বীকার করলেও তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের বলতে রাজি হয়নি পুলিশ।
অন্যদিকে রুবেলকে গ্রেফতারের পরপরই স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর পাশে রুবেলের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সুন্দরগঞ্জে বিক্ষোভ করেছেন উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান লিটু বলেন, এর আগে সুন্দরগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল কাদেরের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনার সঙ্গে যুব সংহতির এই নেতা ও জব্দকৃত অস্ত্র-গুলির কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।
গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আমার সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের ছবি আছে। রুবেলের সঙ্গে ছবি থাকতেই পারে। কারো সঙ্গে ছবি থাকা অপরাধ নয়।
তিনি বলেন, রুবেল এখনও অপরাধী প্রমাণিত হয়নি, পুলিশের দৃষ্টিতে তিনি অভিযুক্ত। তদন্তে ঘটনার পুরো রহস্য উদঘাটন হবে। তিনি বা তার দল তদন্তে কোনো প্রভাব বিস্তার করছেন না।
এর আগে ২০১৬ সালে ৩১ ডিসেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা মাস্টারপাড়ায় নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্য করা হয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে। পরবর্তীতে ওই মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. কাদের খানসহ সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।