মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে তালিকায় নেই এমন মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দিয়েছে সরকার। সারাদেশে এ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে হলেও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন ফাইলবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এসময় লিখিত বক্তব্যে মো. মানিকুজ্জামান বলেন, ‘কোনও এক অজানা কারণে প্রতিবেদনটি ফাইলবন্দি করে রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার হরণ করা হয়েছে।’ যাচাই বাছাই করা প্রতিবেদন অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তির পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানান।
মনিরুজ্জামান জানান, বর্তমান সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অধীনে ২০১৪ সালে তালিকায় নাম বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমরা এ সুযোগ গ্রহণ করি। ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি পাঠানো আবেদন যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়।
তিনি বলেন, ‘যাচাই বাছাই শেষে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে তৎকালীন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হুরে জান্নাত চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। এছাড়াও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক ও সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছেও এর অনুলিপি পাঠানো হয়। কিন্তু সারাদেশের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যথাযথ দপ্তরে পৌঁছে অগ্রগতি নিশ্চিত হলেও কেবল ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার তালিকাটির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।’
মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্দেশনা যথাযথ পালন ও আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে যাচাই বাছাই শেষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে তালিকাটি গ্রহণ করেছিল বলেও জানান তিনি। মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রহস্যজনক ভাবে আমাদের তালিকা মূলত ফাইলবন্দি। অগ্রগতি নেই, এ ফাইলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়েছে কোনও এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। সময়ের ব্যবধানে সেই অপশক্তির নাম পরিচয় আমরা তুলে ধরতে বাধ্য হব।’ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
তিনি আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রথম শহীদের গৌরব অর্জন করেছিলেন আসাদুজ্জামান বাচ্চু। কিন্তু, এ শহীদের নাম এখনও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্থান পায়নি। এছাড়াও শহীদ ধীরেন্দ্র কুমার দাস, শহীদ মো. আবদার আলী, মৃত সৈয়দ মুজাহিদ আলী, বদরুল ইসলাম (নিলু), মৃত শহীদুল করিম চৌধুরী, আব্দুল বাছিত চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল লতিফ, মরহুম নাজমুল হোসেন, মো. আব্দুল জব্বারের নামও তালিকার বাইরে রয়েছে।’
প্রয়োজনে পুনরায় তদন্ত করে বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকাভুক্তির দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, মো. মানিকুজ্জামান, মখলিছুল করিম চৌধুরী, মো. শিহাব চৌধুরী, সৈয়দ মোস্তাফা নেওয়াজ, মো. আশফাকুল ইসলাম (সাব্বির) ও সুমা করিম চৌধুরী।