ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাঈম। বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে হল ছাড়তে হয় গত বছরের ১৭ মার্চ। এরপর দীর্ঘ সময় কেটেছে গ্রামের বাড়ি বরগুনায়।
করোনা শুধু ক্লাস-পরীক্ষা কিংবা হল জীবনে প্রভাব ফেলেনি একই সাথে বন্ধ হয় নাঈমের জীবন-জীবিকাও। তিনটি টিউশনির টাকায় চলতো পড়ার খরচ। সেটিও বন্ধ দীর্ঘ প্রায় এক বছর। সম্পূর্ণ গোছানো ও পরিকল্পিত একটি জীবন এখন ভাসমান। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক বাবার সামান্য অবসর ভাতায় পাঁচ ভাইবোনের শিক্ষা জীবনই আজ হুমকির মুখে।
নাঈম বলেন, করোনার আগে আমার তিনটা টিউশনি ছিলো। সেটা দিয়ে আমার পড়াশুনা চলতো। এমনকি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচও চালিয়েছিলাম।
একই সংকট অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই। করোনা নওগাঁর রবিউল ইসলামকে শিক্ষার্থীর পরিচয় ছেড়ে বানিয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গৃহশিক্ষক।
শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের প্রায় সবকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। হল ক্লাস খোলার সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আরো ভোগাবে বলেই মত তাদের।
তারা জানান, সরকার হল খোলার বিষয়ে এখন যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা ভালো কিছু হবে না। এতে আমাদের শিক্ষা জীবন আরও দীর্ঘায়িত হবে। যার প্রভাব ভুক্তভোগী আমরাই হবো।
শিক্ষার্থীদের এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত নন শিক্ষকরাও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, করোনা বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ। এটার পুরো বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু সবাই আস্তে আস্তে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে এসেছে। এখন হল খুলে দেয়া উচিত। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; তা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২৪ মে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ২৭ মে হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।