ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তারা আশা প্রকাশ করছেন, জো বাইডেনের আমলে সংকটগুলোর সমাধান আসবে। মিলবে অধিকার। তবে দখলদার ইসরাইলও বলছে, বাইডেনের সময়েও তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সব সুবিধা আদায় করে নেবে। বুধবার তারা পশ্চিম তীরে নির্মাণাধীন একটি মসজিদ ভেঙে দেয়। জেরুজালেমে চালায় ব্যাপক ধরপাকড়।
এক পাক্ষিকভাবে ২০১৭ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দেন। এরপর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা দেওয়া ইউনাইটেড ন্যাশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬০ মিলিয়ন ডলারের বার্ষিক সহায়তা বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। এ ছাড়া দখলদার ইসরাইলকে আরও বেশি মদদ দিয়ে ইহুদি বসতি গড়ে তুলতে সহায়তা করেন।
তবে ট্রাম্পের আমলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে জো বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত রিচার্ড মিলস এ কথা জানিয়েছেন।
দ্বিরাষ্ট্র নীতিতে সমাধান আর ফিলিস্তিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা ও ত্রাণ সহায়তা ফের চালুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। যা নিয়ে আশার আলো জেগেছে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মনে। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তারা আশা প্রকাশ করছেন, বাইডেনের আমলে সমস্যাগুলোর সমাধান মিলবে।
তবে ইসরাইলের নাগরিকদের মতে, জো বাইডেনকেও ট্রাম্পের মতো সহায়তা করতে হবে। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তেল আবিবকে উপেক্ষা করতে পারেন না বলে মন্তব্য তাদের।
পশ্চিম তীর ইহুদি বসতি প্রকল্পের পরিচালক বারুচ গর্ডন বলেন, জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করাসহ ইসরাইলকে সার্বিক সমর্থন করায় পশ্চিম তীরে বেড়েছে বসতি। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণার পর গত বছরে আমরা ৪ লাখ ৭৫ হাজার সংখ্যা পার করেছি কেবল পশ্চিম তীরেই। ছোট্ট এ শহরে এত মানুষের বসতি গড়া সত্যিই বড় অর্জন। এখন সবখানেই ইহুদি বসতি ছড়িয়ে যাচ্ছে। আগামীতে জো বাইডেনও আমাদের সমর্থন দেবেন এটাই আশা করি।
এক পরিসংখ্যান বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে গত চার বছরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ইহুদি বসতি বেড়েছে। দখল করা পশ্চিম তীরেই বেড়েছে ১৩ শতাংশের মতো। আর পুরো ইসরাইল ও ফিলিস্তিনে ইহুদিদের সংখ্যা বেড়েছে ৮ শতাংশ। বর্তমানে তাদের মোট জনসংখ্যা ছুঁয়েছে ৯৩ লাখে।
এ অবস্থায় আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে দখলদার বাহিনী। পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি দখলদার ইসরাইলি বাহিনী, ফিলিস্তিনিদের নির্মাণাধীন মসজিদ ভেঙে দিয়েছে। বুধবার ইসরাইলের কয়েকটি সামরিক যান আল-খলিল শহরের দক্ষিণে ইয়াতা শহরের পূর্ব দিকের এলাকাটি ঘিরে ফেলে ও ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা ১৪০ বর্গমিটার আয়তনের নির্মাণাধীন মসজিদটি ভেঙে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দখলদারেরা মসজিদের কাছের একটি বিদ্যালয়ের কূপও ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ছাড়া অধিকৃত পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেমের হেজমা উপশহরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলাও চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।