সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেই চলবে। গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনার সময় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির জন্য পৃথক দুটি মামলা হয়। এই দু’টি মামলা একই আদালতে চালাতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীর আবেদনের শুনানি শেষে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী এ আদেশ দেন।
ধর্ষণ মামলাসহ বাদী পক্ষের আইনজীবী দুটি মামলার বিচারকার্য একই আদালতে চলার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করবেন বলে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে অবগত করেন। এসময় আদালত বলেন, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে মামলাটি আদালতে চলমান থাকবে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আদালতে গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার ৮ আসামিকে হাজির করে পুলিশ। সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা থাকলেও বাদী পক্ষের আইনজীবীর আবেদনে তা আর হয়নি।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি রাশিদা সাঈদা খানম জানান, আদালতে দুটি মামলার বিচার চালানোর জন্য বাদী পক্ষের পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত তা নামঞ্জুর করে ধর্ষণ মামলার বিচার আদালতে চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেফতারের পর আটজন আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করতে অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিতি। মামলার অভিযোগপত্রে ঘটনার পর আসামিদের পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন পর্যায় প্রত্যক্ষ করা দুজনসহ ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়।