বিশ্বে আবারো মাথাচাড়া দিচ্ছে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী বা নব্য নাৎসি গোষ্ঠী। এমন সতর্কবার্তা দিয়ে এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, নব্য নাৎসিরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। এতে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা।
গুতেরেসে আরো বলেন, হিটলারের মতাদর্শে নব্য-নাজিবাদ, উগ্র শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য বিস্তার এবং সম্প্রসারের যে জোট গঠন চলছে, তার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেয়া এখনোই জরুরি। অভিবাসীবিদ্বেষী, ঘৃণাত্মক বক্তব্য মহমারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মিথ্যা প্রচারণা ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেয়ারও তাগিদ দেন তিনি।
নাৎসিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও এর পরবর্তীতে সময়ে যে ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ চালিয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিতে বলেন গুতেরেসে। বলেন, 'হলোকাস্টের সময় ৬০ অথবা ১১ লাখ ইহুদি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
হলোকাস্ট বা গণহত্যা থেকে সে সময় বেঁচে যাওয়া ৯০ বছর বয়সী রাব্বি আর্থার স্নেয়ার বলেন, আমরা যদি ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেই, তবে ওই নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
'জাতীয় সমাজতন্ত্র' বা ‘নাৎসিবাদ’ একটি রাজনৈতিক মতবাদ, যা বিংশশতকের প্রথমার্ধে জার্মানিতে উদ্ভূত নাৎসি পাটি সম্পর্কিত। এই মতবাদকে সাধারণত এক ধরনের ফ্যাসিবাদ বলে চিহ্নিত করা হয়, যার মধ্যে বৈজ্ঞানিক-কৌলিন্যবাদ (সায়েন্টিফিক রেসিজম), এন্টিসেমিটিজম বা ইহুদিবিদ্বেষ অন্তর্ভুক্ত।
এডলফ হিটলারকে নাৎসিবাদের প্রবক্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের আগে পর্যন্ত এটি জার্মানির রাষ্ট্রীয় মতবাদ ছিল। জার্মানির ইতিহাসে সেই সময়টাকে নাৎসি জার্মানি হিসেবে অভিহিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নাৎসিবাদ পরাজিত হলেও জার্মানি, আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে নব্য-নাৎসিদের উত্থান অব্যাহত রয়েছে।