দিনাজপুরে রামসাগর মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণের সংসারে আরো ৮ জন নতুন অতিথি এসেছে। তীব্র শীতের মধ্যেও শাবকগুলোকে দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে।
রামসাগর এর তত্বাবধায়ক সাদেকুর রহমান জানান, নতুন অতিথি শাবকদের নিয়ে রোদের আলোয় মা হরিণগুলো দুধ খাওয়াচ্ছে। এ দৃশ্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে। বাদাম বা খাওয়ার কিছু নিয়ে ডাকলে অনেক চিত্রা হরিণ ব্যারিকেডের কাছে ছুটে আসছে। তবে কেউ শব্দ করলে তারা পালিয়েও যায়।
দিনাজপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, ঐতিহাসিক এই রামসাগরের জলরাশি ও চিত্রা হরিণগুলো এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। যারা রামসাগরে আসেন তারা একবার হলেও হরিণগুলোর কাছে ছুটে আসেন। চিত্র হরিণের পরিবারে নতুন অতিথি এসেছে শুনে আমিও আমার পরিবার ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে এসেছি হরিণ ও শাবকগুলো দেখানোর জন্য।
হরিণগুলোর তদারককারী বন বিভাগের কেয়ার টেকার জহুরুল ইসলাম জানান, চিত্রা হরিণ শাপলা পাতা, বিভিন্ন গাছের পাতা, ঘাস, বাদাম ছোলাসহ দানাদার খাবার খুব প্রিয়। নতুন অতিথি ৮টি হরিণের বাচ্চা আসায় দর্শনার্থীরা খুব মুগ্ধ। তারা হরিণ শাবকগুলো দেখার জন্য ভিড় জমায়।
দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক ও বনবিট কর্মকর্তা জানান, গত ১৯৯২ সালে ১২ আগস্ট রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে ৬টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। বংশবিস্তারে সংখ্যা বেড়ে বড় ৫৪টি হরিণ এবং গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন সময়ে ৮টি মা হরিণ নতুন ৮টি বাচ্চা হরিণ জন্ম দেয়ায় এখন হরিণের সংখ্যা ৬২টিতে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো জানান, হরিণের সংখ্যা বেড়েছে। এতে খাদ্যের চাহিদাও বেড়েছে। এখন চিত্রা হরিণগুলোর খাদ্যের জন্য সঠিক সময়ে খাদ্য বাজেট পর্যাপ্ত পাওয়া দরকার। চিত্রা হরিণগুলোকে ছোলা, চক্কর, লতাপাতা ইত্যাদি খাবার দেয়া হয়। রামসাগর চিড়িয়াখানায় চিত্রা হরিণ ছাড়াও রয়েছে বানর, হনুমান, ময়ূর, অজগর সাপ, বিভিন্ন প্রজাতির পেঁচা।
তিনি বলেন, দিনাজপুর রামসাগর একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। শীত মৌসুমে করোনাকে উপেক্ষা করেও পিকনিক পার্টি আসে। সব মিলিয়ে দর্শকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই মিনি চিড়িয়াখানা দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রমান্বয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।