মহামারি করোনাভাইরাস পরিত্রাণ পেতে বিশ্বের অনেক দেশ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন অবিষ্কার করেছেন। ইতোমধ্যে এই টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছেও অনেক দেশেও। তবে শোনা গেছে এই করোনা টিকা নেওয়ার পরও অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।
বিবিসির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে টিকা নেওয়ার পরেও অনেকের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাহলে কি করোনাভাইরাসকে টিকা দিয়েও আটকানো সম্ভব না?
ব্যাপারটা হলো টিকা নেওয়ার পর শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগে। টিকা দেওয়ার পর মানবদেহ করোনাভাইরাসের জেনেটিক উপাদানগুলো চিনে নিতে এবং অ্যান্টিবডি ও টি-সেল তৈরি করতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। তার পরই এগুলো ভাইরাসের দেহকোষে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বা আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে শুরু করে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ইমিউনোলজিস্ট অধ্যাপক ড্যানি অল্টম্যান বিবিসিকে বলেছেন, টিকার পুরো কার্যকারিতা তৈরি হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ বা সম্ভবত আরো বেশি সময় লাগে।
যারা টিকা নিচ্ছেন তাদের থেকে কি আবার করোনা ছড়াতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসির বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদদাতা ডেভিড শুকম্যান জানান, এটা এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এ ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন। এর কারণ হলো, টিকার ট্রায়ালগুলোতে দুটি জিনিস দেখা হয়েছে।
একটি হলো- টিকাটি নিরাপদ কিনা এবং অপরটি হলো- তা করোনাভাইরাস আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া কতখানি ঠেকাতে পারে। দুটি ক্ষেত্রেই ভালো ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিলেও একজন থেকে আরেকজনে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কিনা তার অনুসন্ধান করা হয়নি। ফলে যারা টিকা নিয়েছেন তারা অন্যদের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে পারেন কিনা এ বিষটি এখনো অজানা।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন নয় কোটি ৯৭ লাখ ৬৮ হাজার ২১৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪২ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সাত কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৩৬ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।