অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজের মেয়র প্রার্থিতা ফিরে পান সাহবুদ্দিন সওদাগর। মোবাইল প্রতীক নিয়ে নিজেই অটোরিকশায় বসে মাইকে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। নিজের পোস্টার নিজেই লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগও।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিদ্রোহীসহ অন্য সব মেয়র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক নিয়ে জমজমাট প্রচারণার মধ্যে একজন মেয়রপ্রার্থীর ভিন্নধর্মী প্রচারণার বিষয়টি ভোটারদের মধ্যে দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠছে।
আগামী ৩০ জানুয়ারি বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে এমন ব্যতিক্রমী প্রচারণা চালানো মেয়রপ্রার্থী হলেন পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বসিন্দা সাহবুদ্দিন সওদাগর। পেশায় একজন লরি শ্রমিক। সারাবছর তিনি লরিতে কাজ করে পরিবার নিয়ে থাকেন।
এর আগে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রত্যেকে ১০০ জন ভোটারের স্বাক্ষর সংবলিত কাগজ জমা দিতে হয়। ওই তালিকা থেকে পাঁচজনের স্বাক্ষর তদন্ত করেন নির্বাচন অফিসার। তদন্তে তারা প্রত্যেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে তিনটি করে স্বাক্ষরের মিল না পাওয়ায় ৩ জানুয়ারি তাদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করলে ৮ জানুয়ারি তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।
ওই বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে সাহবুদ্দিন সওদাগরসহ তিনজন মেয়রপ্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হোসাইন এবং বিচারপতি মে. খায়রুল আলমের সমন্বিত বেঞ্চ ১৯ জানুয়ারি তাদের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে অটোরিকশায় বসে টাউন হল এলাকায় মাইকে প্রচার চালাচ্ছিলেন প্রার্থী সাহবুদ্দিন সওদাগর। দেখা যায় নিজেই মাইকিং করছেন। তিনি বলেন, ‘আর থাকব না গভীর বোকা, ওঠব আমরা জেগে, গড়ব সমাজ মুক্তিযোদ্ধার বেশে’। এভাবে মাইকিং করে ভোটারদের ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
এ সময় নিজেই নিজের মাইকিং করা ও পোস্টার লাগানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পরিবর্তনের জন্য মাঠে নেমেছি। আমি একজন শ্রমিক তাই সাধারণ মানুষের কষ্ট বুঝি। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করব। আমার প্রার্থিতা পেতে হাইকোর্ট পর্যন্ত যেতে হইছে। মানষ এখন পরিবর্তন চায়। সুন্দর নগরী গড়তে আমি বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ ভোটাররা চাইলে আমি নির্বাচনে জয়যুক্ত হব।
এ সময় তিনি তার ইশতেহারের কিছু কথা জানিয়ে বলেন, পৌরসভার আলাদা মার্কেট হবে, পৌরসভায় সংযোগ সড়কগুলোতে বাইপাস সড়ক করা হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতকরণ ও পানি সরবারহ নিশ্চিত করা হবে।
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ভোটারদের কাছে গিয়ে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি এতে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। রাজনৈতিক দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ভোটাররা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমাকেই চাচ্ছেন।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বলেন, হাইকোর্টের আদেশে তার প্রার্থিতা তিনি ফিরে পেয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণা অনেক ভালো। এই প্রার্থীসহ মোট নয়জন মেয়রপ্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।