করোনার ধকল কাটিয়ে বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক আলোচিত ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পকাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ১৯তম সভা। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের বিদ্যুৎ সচিব সঞ্জীব নন্দন সাহাই।
সভায় বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতায় চলমান সব কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর মধ্যেও রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। সভায় ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
রামপাল প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কোভিড ১৯ মহামারির কারণে গত বছরের এপ্রিলে বন্ধ করে দিতে হয় প্রকল্প কাজ। পরে আগস্ট থেকে আবারো কর্মচাঞ্চল্যে ফিরে প্রকল্প এলাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান প্রকল্প কর্মকর্তারা। আর চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদী বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় ভেড়ামারা-বহরমপুর গ্রিড আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি গ্রিড আন্তঃসংযোগের ২য় সঞ্চালন লাইন নির্মাণের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সভায় প্রস্তাবিত কাটিহার-পার্বতীপুর-বরাহনগর ৭৬৫ কেভি সঞ্চালন লাইন বাস্তবায়নের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়।
আলোচনায় ঠাঁই পেয়েছে নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভারতের মাধ্যমে বাংলাদেশে আমদানির অগ্রগতি এবং ভুটানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশ-ভারত-ভুটানের যৌথ বিনিয়োগের বিষয়টি।
সভায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানিসহ ভারতের বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত গাইডলাইন ও রেগুলেশনের বর্তমান অবস্থা, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে সকল ধরনের সিডি, ট্যাক্স ও ভ্যাট থেকে অব্যাহতি প্রদান, রাজনৈতিক কারণে বা ভারতীয় আইন পরিবর্তনের কারণে আর্থিক ধাক্কা দেখা দিলে তা থেকে অব্যাহতি প্রদানের বিষয় পর্যালোচনা করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ-ভারত ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৯তম সভা।
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি ও যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৮তম সভা গত বছরের মার্চে ভারতে অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির পরবর্তী সভা আগামী জুলাই মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।