নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহর এলাকায় বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনে পুড়ে শিশুসহ একই পরিবারের চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ও পল্লীবিদ্যুতের তিন সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলাও হয়েছে। শুক্রবার রাতে নিহত মাছুমের মামা নূর হোসেন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় এই অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
এদিকে আগুনে পুড়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হওয়া একই পরিবারের চারজনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শনিবার দুপুরে সদরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এসময় সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে হাসপাতালের পরিবেশ।
এই দুর্ঘটনার জন্য নিহতের পরিবারের স্বজনরা বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলাকে দায়ী করছেন। এমন দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য আবাসিক এলাকায় বসতবাড়ির উপরে বা পথে-ঘাটে যত্রতত্র বিদ্যুতের তারের সংযোগ স্থাপন না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান স্বজনরা। একইসঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিও করেন তারা।
এদিকে, এ ঘটনায় পল্লীবিদ্যুতের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পল্লীবিদ্যুতের ঢাকা বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, তদন্ত কাজ শুরু করেছে। প্রতিবেদন দাখিলের পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানির কুঁড়িল বিশ্বরোডের ৩০০ ফুট সড়কের পাশে পূর্বাচল উপ-শহরের ১১ নম্বর সেক্টরের কুমারটেক এলাকায় ডেসকোর ১১ হাজার ভোল্টের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তার ছিঁড়ে ঘরের চালে পড়লে সর্টসার্কিট হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অটো রিকশা চালক মাছুম, তার স্ত্রী, গৃহ পরিচারিকা সীমা এবং তাদের দুই প্রতিবন্ধি ছেলে রাসেল (১৭) ও রহমতউল্লাহ (১০)।
খবর পেয়ে পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোসহ নিহতদের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে। পরে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুশরাত জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।