করোনাকালে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য সরকার ঘোষিত ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের মধ্যে গেল ডিসেম্বর শেষে মাত্র ৫৪ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। বাকি অর্থ এখনো পড়ে আছে। মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঋণ পেলেও নানা জটিলতায় ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি রিজওয়ান রহমান। এ অবস্থায় অর্থছাড়ে শর্ত শিথিল করতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় করোনা ধাক্কায় কাটিয়ে উঠতে পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন নতুন রফতানি বাজার খোঁজার পরামর্শ দেন ডিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, আমাদের রফতানি খাত এখন তৈরি পোশাকনির্ভর। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানির পণ্যের ৮৩ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক। এছাড়া রপ্তানি পণ্যের তালিকায় কৃষিপণ্য ৪শতাংশ; পাট ও পাটজাত তিন শতাংশ; চামড়াজাতপণ্য দুই শতাংশ; প্রকৌশল পণ্য এক শতাংশ এবং সাত শতাংশ ছিলো অন্যান্য পণ্য।
গেল অর্থবছরে রপ্তানিবাজারের মধ্যে শীর্ষে ছিলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গেল অর্থবছরে ইইউ দেশগুলোতে ৫৬ শতাংশ পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এরপরের অবস্থান উত্তর আমেরিকার। রফতানি হয়েছে ২১ শতাংশ পণ্য। এ ছাড়া এশিয়ায় ১২ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশে রফতানি হয়েছে ১১ শতাংশ পণ্য। ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়ার দেশগুলোতে রফতানি বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারের পরামর্শ দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি রিজওয়ান রহমান। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, জিডিপির অনুপাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এমনকি শ্রীলঙ্কার পেছনে বাংলাদেশের অবস্থান। সর্বশেষ অর্থবছরে ভিয়েতনামের জিডিপির ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ এসেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ থেকে। ভারতে এসেছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার এসেছে জিডিপির শূন্য দশমিক নয় শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ।
ডিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে ২০৪১ সাল নাগাদ ৫৫ লাখ মানুষ কাজ হারাবে। তাই এখন থেকে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এ বছরের শেষে বিনিয়োগ সম্মেলনের ঘোষণা দেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান।