জুন পর্যন্ত প্রতি মাসেই আসবে ৫০ লাখ ডোজ টিকা। সংরক্ষণাগার বাড়ানোই এখন চ্যালেঞ্জ। এখনও প্রস্তুত হয়নি ফাইজারের ভ্যাকসিন সংরক্ষণের স্থান। চলতি মাসেই দেশে ভারত থেকে আসছে কোভিড টিকার আরো ৫০ লাখ ডোজ। প্রাথমিকভাবে এসব টিকা সংরক্ষণে পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে-সংশ্লিষ্টরা এমন দাবি করলেও টিকা আসার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়াতে হবে সংরক্ষণাগারের পরিধিও। আর কোভ্যাক্সের মাধ্যমে প্রথম অবস্থায় মিলবে ফাইজারের ৮ লাখ টিকা, যা রাখতে হবে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায়। আর সে টিকা বুঝে নেওয়ার আগে উপযুক্ত সংরক্ষণাগার তৈরি করাই এখনকার প্রধান চ্যালেঞ্জ।
দেশে এরই মধ্যে এসে গেছে ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ ডোজ কোভিড টিকা। আর চলতি মাসেই আসার কথা রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ। জুন পর্যন্ত প্রতি মাসেই আসবে একই হারে টিকা। এ ছাড়া কথা রয়েছে কোভ্যাক্স থেকে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য টিকা পাওয়া।
তবে এখন ভাবনার বিষয় কীভাবে সংরক্ষণ করা হবে টিকা। বর্তমানে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি-ইপিআই প্রধান কার্যালয়ে রাখা হয়েছে ভারত থেকে আসা উপহারের ২০ লাখ ডোজ। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার উপযোগী ভারত থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে আসা সেরাম ইনস্টিটিউটের ৫০ লাখ ডোজও প্রথম অবস্থায় এখানে রাখার কথা।
সরকারের কোভিড টিকা বিতরণ পরিকল্পনা অনুযায়ী ইপিআই প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে জেলা ইপিআই স্টোরে। পরে সেখানে থেকে উপজেলা স্টোর হয়ে পাঠানো হবে টিকাকেন্দ্রে। বর্তমানের ২০ লাখ টিকা রাখার সক্ষমতা থাকলেও টিকা আসার হার বাড়তে থাকলে তা সংরক্ষণে রাখাও হবে আরেক চ্যালেঞ্জ। সেক্ষেত্রে আরো ১৭২টি আইএলআরএর প্রয়োজন, এমনটাই বলা হয়েছে কোভিড টিকা নীতিমালায়। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিলে টিকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানো কঠিন কিছু নয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইএলআরএর রিপ্লেস করতে হবে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেরামত জরুরি ভিত্তিতে করা দরকার। তার জন্য অর্থ বরাদ্দ দরকার, প্রশাসনিক আদেশ জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া দরকার, কার্যাদেশ জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া দরকার তাহলে এটা সম্ভব।
এদিকে, কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজারের ৮ লাখ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এ টিকা রাখতে হবে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতি শীতল তাপমাত্রায় সংরক্ষণের উপযোগী এ টিকার জন্য তৈরি করা হচ্ছে সব বিকল্প।
কোভিড টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এ টিকা সংরক্ষণের জন্য যে কারিগরি সহায়তার দরকার সে বিষয়ে কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে এবং দেশের ভেতরে সরকারি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় সে সক্ষমতায় নির্ভরতায় আমরা কাজ করছি।
টিকা আসার পর দ্রুত তা প্রয়োগ করলে সংরক্ষণাগারের ওপর চাপ কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।