সিলেটের শাহপরাণ থানাধীন খাদিম বিআইডিসি এলাকায় ছুরিকাঘাতে নাঈম আহমদ (২২) হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার ৪৬ নং বাসার বাসিন্দা হেবল ফুলিয়ার ছেলে প্রিন্স হিমেল (১৬) ও একই এলাকার পুষ্পায়ন ১৩/১-এর বাসিন্দা হেলাল উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ অলি আহমদ (১৭)।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানান, এ দুজনকে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য ঘটনা খুব দ্রুত উদঘটিত হবে। নাইমের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ও হত্যাকাণ্ড ঘটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন সূত্র ধরে খুনের বিষয়ে পুলিশের ক্রাইম শাখা তদন্ত করছে। শনিবারের মধ্যেই সব কিছু উদঘাটন হবে বলে তিনি আশা করছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে খাদিম বিআইডিসি এলাকার কৃষি গবেষণা খামারের শেষ প্রান্তে লেকের পাশ থেকে নাঈমের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে এসএমপির শাহপরাণ থানা পুলিশ। এ সময় নাঈমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
নাঈম আহমদ শাহপরাণ থানাধীন পাঁচঘড়ি এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে। সে স্থানীয় মোহাম্মদপুর এলাকায় নানার বাড়িতে থেকে গ্রিল মিস্ত্রির কাজ করতো।
ঘটনার পরদিন গত ২০ জানুয়ারি রাতে শাহপরাণ থানায় নাঈমের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নাঈমের বন্ধু সবুজ, রাব্বি, জুনেদসহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলা দায়েরের আগেই বুধবার বিকেলে নাঈমের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন সবুজকে শাহপরাণ এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ২১ জানুয়ারি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সুবজকে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আটক দেলোয়ার হোসেন সবুজ (২২) সিলেটের গোয়াইনাঘাট উপজেলার ফতেহপুরের বড়নগর গুলনি চা বাগানের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে শাহপরাণ এলাকার চামেলীবাগে বসবাস করেন।
এদিকে নাঈম আহমদকে হত্যার পর উঠে আসে একটি ত্রিভুজ প্রেমের গল্প এবং একটি আইফোন বিক্রির টাকা ভাগাভাগির বিষয়। এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে এবং নাঈমের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ও হত্যাকাণ্ড ঘটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
পুলিশ ও নাঈমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সবুজ ও রাব্বিই জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে নাঈমকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। নাইম ফাম্মি নামের এক মেয়েকে ভালোবাসতেন। ওই মেয়েকে ভালোবাসতেন বন্ধু রাব্বিও। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ফাম্মি থেকে কেউ সরে যেতে চাইছিল না।
এরই মাঝে নাইমের বন্ধু সবুজ ও রাব্বি এক বড়লোক বন্ধুর আইফোন কৌশলে বিক্রি করে ফেলে। আইফোনের মালিককে সবুজ ও রাব্বি বলে মোবাইল হারিয়ে গেছে। কিন্তু মূল ঘটনা জানতো নাঈম। এ কারণেও নাঈমকে হত্যা করা হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।