এখন থেকে প্রতিবছর ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার নিচের দুই স্তরের কর্মকর্তাদের সব ধরনের সম্পদ বিবরণী নিজ নিজ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে জমা দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যদিও প্রজ্ঞাপন ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে শুক্রবার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের এসব উচ্চপদস্থদের পারিবারিক ব্যবসা, কৃষি, শিল্প, সম্পদের তথ্যও দিতে হবে। এ তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি দেশের সব ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডি বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময় এ নির্দেশনা দিলো যখন আদালত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখভালে নিয়োজিত ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মকর্তার তালিকা ও পরিচয় দাখিলের জন্য গভর্নরকে নির্দেশ দেন আদালত।
অর্থ লুটপাট ও পাচারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কোনো ইন্ধন বা যোগসাজশ ছিল কিনা তা যাচাইয়ের জন্য এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানান আদালত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৮ ধারার উপধারা (২) এ বর্ণিত বিধানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে। ধারাটির বিধান পরিপালনের লক্ষ্যে প্রত্যেক ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার নিম্নতর দুই স্তর পর্যন্ত কর্মকর্তাদেও নিজ-নিজ বাণিজ্যিক, আর্থিক, কৃষি, শিল্প এবং অন্যান্য ব্যবসার নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য বিবরণী প্রতি পঞ্জিকা বছর শেষে পরবর্তী বছরের ২০ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পারিবারিক ব্যবসায়িক স্বার্থসংশ্লিষ্টতার বিবরণীও জমা দিতে হবে।
বলা হয়েছে, ২০২০ সালের সম্পদ বিবরণী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। দাখিলকৃত বিবরণী পরবর্তী পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করতে হবে। ব্যাংক থেকে এসব বিবরণী যথাযথভাবে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, উচ্চপদস্থ কর্মাকর্তাদের ঝণ জালিয়াতি, অনিয়মে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ, তথ্য প্রমাণ বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। এর মধ্যে পিপলস লিজিংসহ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে দেশ ছেড়েছেন পিকে হালদার। তার সঙ্গে অনেকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তদন্ত চলছে।