রাজধানীজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত খাল ও নর্দমা পরিণত হয়েছে কিউলেক্স মশার উর্বর প্রজনন ক্ষেত্রে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি অনেকটা পাশ কাটিয়ে চলে মশক নিধন কার্যক্রম। ফলাফল দিনে-রাতে মশার উৎপাতে অতিষ্ট নগরবাসী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকসই সমাধান পেতে সবার আগে ধ্বংস করতে হবে প্রজনন ক্ষেত্র। পাশাপাশি মশা মারতে পরীক্ষিত ও কার্যকর ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ তাদের।
আগারগাঁও এলাকার মশার বাগানবাড়িতে মশক সমাবেশের দৃশ্যই বলে দেয় রাজধানীতে কতোটা বেড়েছে মশার দাপট। মানুষের নগরে এক প্রকার রাজত্বই গড়ে তুলেছে ক্ষতিকর এই কীট। কোথাও উৎপাতের মাত্রা ছাড়িয়েছে সহ্যের সীমা। সকল প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রক্তের নেশায় বুদ এই মশক দল। কোথাও হয়তো কিছুটা প্রতিশোধপ্রবণও।
এক রিকশাচালক জানান, শীতকালে মশা একটু ধরে। কেননা এই সময়ে গায়ে কাথা থাকে। আর গরমকালে মশার জন্য ঘুমানো যায় না।
একই এলাকার বাসিন্দা গৃহিনী ইয়ানূর। জানালেন, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই টাঙিয়ে রাখতে হয় মশারি। কাজে আসে না দামি দামি কয়েলের বিষাক্ত ধোঁয়াও।
মশার উৎপাতে অতিষ্ট নগরবাসীর অবশ্য অজানা নয় এর উৎস। অথচ দিনে দিনে নিজেরাই তৈরি করেছেন এমন প্রজনন ক্ষেত্র। এক্ষেত্রে উদাসীন নগরকর্তৃপক্ষও।
এদিকে, চলতি বছরের শুরুতে ওয়াসার হাতে থাকা ঢাকার খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সিটি করপোরেশন পেলেও এখনো আসেনি দৃশ্যমান পরিবর্তন। এক্ষেত্রে নগরকর্তৃপক্ষকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, খালগুলোকে উদ্ধার করে তাকে সরল ও জল প্রবাহের নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে মশকের আধার খাল হবেই।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ওয়াসা থেকে আমরা যে ডোবা ও খালগুলোকে পেয়েছি এগুলোর প্রত্যেকটার সংস্কার কাজ চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাবেন।
দীর্ঘদিনের অবহেলায় রাজধানীজুড়ে থাকা ২৬টি খালের অর্ধেকেরও বেশি পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগারে।