অবশেষে পুরানো গাড়ি আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো সরকার। তাই নতুন নীতিমালায় আনা হয়েছে সংশোধনী। তবে, দেশেই গাড়ি তৈরির লক্ষ্য থেকে পিছু হটেনি শিল্প মন্ত্রণালয়, এজন্য আসছে বাজেটেই বাড়তে পারে গাড়ি আমদানিতে শুল্ক করের হার। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এই উদ্যোগে ধস নামবে গাড়ি বিক্রিতে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব আয়ের সংকট আর বিনিয়োগ সুরক্ষার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে সমানভাবে।
গত এক দশকে দেশের অভ্যন্তরীণ দূরত্ব কমিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। এতে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার। যার প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড জাপানি গাড়ি।
এ অবস্থায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০ এর খসড়া প্রস্তাবনায় গাড়ি আমদানি বন্ধের কথা বলা হলেও, সেখান থেকে সরে এসেছে সরকার। ব্যবসায়ীদের দাবি দাওয়া আমলে নিলেও, গাড়ি তৈরির বিষয়টিকে বহাল রেখেই নীতিমালা চুড়ান্ত করতে যাছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, গাড়ি উৎপাদনে যদি বেসরকারি খাতও এগিয়ে আসে তাদেরকে দেয়া হবে। কেননা আমাদের এখানে স্বল্প পারিশ্রমিকে শ্রমিক পাওয়া যায়।
সরকার সিদ্ধান্ত বদলালেও, তাতে ঠেকানো যাবে না রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারের ধস, এমন আশঙ্কা আমদানিকারকদের।
শীর্ষ রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিকারক মো. আসলাম সেরনিয়াবাত বলেন, সিকিডি বা স্কিডি যদি আনে তাহলে দেখা যাবে ১০ জনে বা ২০ জনে আনবে। সে ১০ জন ও ২০ জন মানুষ মনোপলি ব্যবসা করবে। এতে সরকার রাজস্ব হারাবে।
বারভিডা সভাপতি আব্দুল হক বলেন, তাকে সুবিধা দেবে ১০ শতাংশ। আমার জন্য ১০৩ শতাংশ। তাহলে তো আমরা মারা যাবো। এটা কোন দিন সমর্থন করতে পারি না। একই সঙ্গে বাজারের জন্য ভালো না।
অর্থনীতিবিদরা চান, করোনাকালে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হোক রাজস্ব আয় ও বিনিয়োগ সুরক্ষায়।
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ড. আবু ইউসুফ বলেন, সরকারের এই উদ্যোগকে ভালো মনে করি। তবে যারা পুরাতন গাড়ি ব্যবসায়ী আছেন; তাদের বিষয়ও ভাবতে হবে।
গেল অর্থবছরে ১৬ হাজার গাড়ি নিবন্ধিত হলেও করোনার কারণে এ বছর তা নামতে পারে ১০ হাজারে। বারভিডার ৯ শতাধিক প্রতিষ্ঠানে, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিক্রি থেকে প্রতি অর্থবছরে গড়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার।