সরকারি নিয়োগ, বদলি, পদায়ন কিংবা পদোন্নতি। মামলা রুজু থেকে ফাইনাল রিপোর্ট। সবই সম্ভব বরিশালের দ্বীন ইসলামের কাছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের নাম-পদবি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, তিনি একাধিক মামলার আসামি।
বরিশালের দ্বীন ইসলাম। ২০১৪ সাল থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাতায়াত তার। দীর্ঘদিন যাতায়াতের কারণে মন্ত্রণালয়ের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম পদবি জানতেন। একসময় তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে শুরু করেন অফিস সহকারী হিসেবে। তৈরি করেন ভুয়া প্রত্যয়নপত্র, এমনকি আইডি কার্ড।
মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন এই পরিচয়ে নিয়োগের নামে লোক ঠকানোর ব্যবসা শুরু করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্যাড নকল করে তৈরি করতেন নিয়োগপত্র। শুধু চাকরি নয়, বড় কর্মকর্তাদের পরিচয়ে থানায় ফোন দিয়ে কখনো মামলা রুজু করার জন্য, কখনো মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য তদবির করতেন।
ফায়ার সার্ভিস ও আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বরগুনার আমিরুল ইসলাম ও তার এক ভাইয়ের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ১৪ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী মতিউর রহমান বলেন, আমার সঙ্গে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছে। নিয়েছে ১৪ লাখ টাকা। এরই মধ্যে কয়েকবার ঢাকা নিয়েছে। পরবর্তীতে আমি বলি, আমাদের টাকা-পয়সা দিয়ে দেন। টাকা আর দেয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের বড় কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা নিষ্পত্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মতিউর বলেন, আপনার নামে অনেক মামলা হয়েছে। ছেলেমেয়ে সবাই জেল খাটবেন। আপনার জায়গাজমি নিয়ে সরকার নিয়ে যাবেন। পরে আমি বললাম এর থেকে বাঁচার উপায় কী? তখন বলেন, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও মামলার পর গ্রেফতার করা হয় দ্বীন ইসলামকে। প্রতারক দ্বীন ইসলাম বলেন, মাঝে মাঝে মন্ত্রণালয়ে আসতাম। কিছু স্যারদের সঙ্গে ভালো ভালো সম্পর্ক হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, নিয়োগ কিংবা তদবিরে কখনো কখনো সফলও হতেন। তাকে গ্রেফতারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের কেউ তার সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।