আফগানিস্তানে অব্যাহতভাবে বাড়ছে সংঘাত। এরমধ্যেই কাতারের দোহায় আফগান সরকার এবং তালেবানের শান্তি আলোচনা চলছে। রোববার এগারোতম দিন পার হয়ে গেলেও আলোচনার বিষয়বন্তু চূড়ান্ত করতে পারেনি দু’পক্ষ।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে আফগানিস্তানের সাতটি প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। নিহত হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ১৯ সদস্য। সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে কাবুল, হেরাত, বাঘলান, লাঘমান, নানগারহার, কান্দাহার এবং হেলমন্দ প্রদেশে।
উভয় পক্ষের সূত্র জানিয়েছে, এজেন্ডা চূড়ান্ত করতে রোববার তাদের মধ্যে কোনো বৈঠক হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শান্তি আলোচনা বিষয়ক মুখপাত্র নাজিয়া আনওয়ারি বলেন, এজেন্ডা চূড়ান্তে সরকারি পক্ষের প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। তালেবানের সঙ্গে আরো বৈঠকে প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বিদায়ে ঝুলে যেতে পারে আফগান শান্তি আলোচনা
আগেরদিন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুযায়ী আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার সংখ্যা আড়াই হাজারে সীমিত করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার মিলারকে উদ্ধৃতি করে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় দুই দশকের আফগানিস্তান যুদ্ধ নিরসনের দ্বারপ্রান্তে আমরা; এর আগে এত অগ্রগতি কখনোই হয়নি। আফগানদের অংশগ্রহণে, আফগানদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক সমাধান এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে চলমান শান্তি আলোচনাকে স্বাগত জানাই আমরা।
মার্কিন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাইম। মার্কিন সিদ্ধান্ত আফগান সংকট সমাধানকে ত্বরান্বিত করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বলেন, গতকাল (শনিবার) আফগানিস্তান থেকে আরও মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। এটা ভালো অগ্রগতি এবং বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ। নিঃসন্দেহে ইসলামি আমিরাত অব আফগানিস্তান (তালেবান) এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার চুক্তির বাস্তবায়ন উভয় দেশকে উপকৃত করবে।
তালেবান চুক্তির শর্ত মেনে চলেবে। যুক্তরাষ্ট্রকেও চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
২৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের মধ্য চুক্তি সই হয়। সংঘাত নিরসনে দু’পক্ষের চুক্তিতে আশাবাদী হয়েছিল আফগানরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক আহ্বান উপক্ষো করে সরকারি বাহিনীর সদস্যদের উপর অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান।
আফগান সংহতি আন্দোলনের প্রধান সাঈদ ইশাক বলেন, কিছু বিষয়ে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা কর্তৃত্ব হারিয়েছি। বিদেশিরা যা বলে আমরা তাই করি। আমি মনে করি এখন যা চলছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবো না।
প্রাথমিকভাবে গুঞ্জন ছিল, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরই শনিবার এজেন্ডা চূড়ান্তে আলোচনা শুরু হবে।
আফগানিস্তানের রাজনৈতিক কাঠামো কি হবে, কিভাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর সম্ভব পাশপাশি সম্ভাব্য একটি চুক্তিকে কেন্দ্র করে গেল দু’সপ্তাহ ধরে আফগান সরকার এবং তালেবানের মধ্যে আলোচনা চলছে।
আফগান পার্লামেন্ট স্পিকার রাহমান রাহমানি বলেন, শান্তির জন্য আমাদের ছাড় দিতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা এবং লক্ষ্য ঠিক করে যৌক্তিক ছাড় দেয়ার জন্য সবার প্রস্তুত হওয়া উচিৎ।