একের পর এক প্রকল্প হাতে নিয়েও কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার কারাপণ্যের যথাযথ বাজারজাত নিশ্চিত করতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। সে ক্ষেত্রে আরো বড় পরিসরে পরিকল্পনা নেওয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হলেই ত্বরান্বিত হবে এসব প্রকল্প।
জেল কোড অনুসারে, প্রতি ৩৫ বর্গফুট জায়গা এক জনের জন্য বরাদ্দের কথা থাকলেও, কারাবন্দিরা পাচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা। কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য বলছে দেশের কারাগারে মোট ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ১৫০ জন। অথচ দেশের বিভিন্ন কারাগার মোট বন্দি ৮২ হাজার ২৯০ জন যার মধ্যে পুরুষ ৭৩ হাজার ১২৭ আর নারী ৩ হাজার ১৬৩ জন। যদিও বেলা শেষের হিসাবটা এমন হলেও, সারা দিনের হিসাবটা অন্য রকম।
চর্চা ও খেলাধুলা আর সাংস্কৃতির নানা আচার অনুষ্ঠান বদলে দিয়েছে জেল জীবনের মানে।
এক কারাবন্দি বলেন, 'জেল সম্পর্কে আমাদের খুব ভীতিকর এবং খারাপ একটি ধারণা ছিল। এখানে এসে এখন সেই ধারণাটা অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে।'
বন্দি পুনর্বাসনের আওতায় দেশের বড় কারাগারগুলোতে বন্দিদের জন্য গড়ে উঠেছে ছোট্ট ছোট্ট বেশ কিছু শিল্প। দক্ষতা বাড়াতে চলছে প্রশিক্ষণ।
তবে পণ্যবিপনের ব্যবস্থা ঠিকঠাক না হওয়ায় কিংবা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসব দক্ষতা কাজে লাগানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই সুফল মিলছে না সেভাবে।
সূত্র বলছে, কারা অধিদফতরের ১২ হাজার ১৭৮টি পদের বিপরীতে এখনো শূন্যপদ ২ হাজার ২২। তাই কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, সবার আগে মেটাতে হবে জনবল ঘাটতি। তাই বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন বড় পরিসরে পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়নে।
অপরাধ বিশ্লেষক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, একটা নীতিতে যখন পরিবর্তন আসবে তখন কিন্তু আইন, নীতি, অবকাঠামো সব পরিবর্তন করতে হবে।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমেনুর রহমান মামুন বলেন, এই বিষয়ে আমরা শুরু করেছি। আমরা আশা করি এটার বিস্তৃতি আরও করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি এই কার্যক্রমকে কীভাবে আরো গতিশীল করা যায়।
দক্ষতা বৃদ্ধির এসব কার্যক্রমে গতি এলে হয়তো অপরাধে শাস্তি পাওয়া এই মানুষই দক্ষ জনগোষ্ঠীতে বদলে যাবে।