গাভীর খাবার প্রয়োজন? জানিয়ে দেবে বিশেষ সেন্সর। আবার প্রজননের সময় দেবে সতর্ক সংকেত। এমনই উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করেছে উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন হাইটেক খামার। শুধু কি তাই, দুধ সংগ্রহ থেকে শুরু করে পাস্তুরিত করা পর্যন্ত খামারের সবই হচ্ছে হাতের স্পর্শ ছাড়াই। ২ শতাধিক উন্নত জাতের বিদেশি গাভি নিয়ে যাত্রা শুরু করা রংপুরের ওই খামারে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে দুই হাজার লিটার দুধ।
এমন একটি খামার পরিদর্শনে গিয়ে মৎসও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, গুঁড়া দুধ উৎপাদনে কেউ যদি খামার-কারখানা করতে চান, যারা এগিয়ে আসবেন, রাষ্ট্র তাদের সহায়তা দেবে। শুল্ক বা কর নিয়ে কোনো অসুবিধা হবে না।
একটি খামার, যেখানে প্রত্যেকটি গাভির গায়ে বসানো হয়েছে তিনটি আইওটি সেন্সর বা ডিভাইস, যা কিনা নিশ্চিত করবে গাভির সুস্বাস্থ্য। শুনতে অবাক লাগলেও প্রযুক্তির এমন ব্যবহার দেখা যাবে রংপুরের এক খামারে, যাকে বলা হচ্ছে হাইটেক দুগ্ধ খামার।
বিশেষ সফটওয়্যারে নিয়ন্ত্রিত এসব সেন্সরের মাধ্যমে গাভির চলাফেরা, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক অবস্থা, দুধ দোহনের পরিস্থিতি, ওষুধের সঠিক ব্যবহার, মনিটরিং করা হচ্ছে সবকিছুই। এমনকি প্রজননের সময় আসলেও তা জানান দেবে সেন্সর। স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে খামারে চাষ করা কাঁচা ঘাস ও খড়সহ অন্যান্য খাদ্য উপাদান টিএএমআর মেশিনের মাধ্যমে মিশ্রিত করে তাৎক্ষণিকভাবে গাভি ও বাছুরকে খাওয়ানো হচ্ছে। আটজনের টিম নিয়ে যার পুরো তদারকি করছেন নেদারল্যান্ডসের একজন পশু চিকিৎসক। উদ্যোক্তারা বলছেন, সকাল-বিকেল দুই দফায় সর্বোচ্চ ৩৭ লিটার করে দুধ দেয় প্রতিটি গাভি।
ইয়ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোমিন উদ দৌলা বলেন, কোনো গরু অসুস্থ হলে সেন্সর সেটি জানিয়ে দেবে। মাত্র ৮ মিনিটের মতো লাগে দুধ সংগ্রহ করতে। পাম্পের মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেশিনে দুধ চলে যায়, তারপর পাস্তুরির করা হয়।
বর্তমানে দেশে বছরে ৩-৪ হাজার কোটি টাকার গুঁড়ো দুধ আমদানি করা হয়, এই নির্ভরতা কমাতে চায় সরকার।
যদিও খামারটিতে বিনিয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য জানাতে রাজি হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রায় ৫০ একর জায়গায় অস্ট্রেলিয়া থেকে বিমানে আনা ২২৫টি হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান গাভি দিয়ে খামারটির যাত্রা শুরু হয়।