নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মেয়াদপূর্তির ১৭ দিনের আগেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেলেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বাসভবন ছেড়ে সস্ত্রীক ঢাকা চলে গেছেন। যাওয়ার আগে নিয়মমাফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারা প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রেজারার।
ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেমের মেয়াদপূর্তির শেষ সময়ে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে মঙ্গলবার দিনভর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দাবি ফলপ্রসূ আলোচনা ছাড়া সেখান থেকে যাবেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে অবস্থান নেয় পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন। পরিস্থিতি শান্ত করতে ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে যান পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেখানে বিক্ষোভকারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন ভিসি। আশ্বাস দেন সমস্যা সমাধানের।
কিন্তু ভিসি এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোন সমাধান না দিয়ে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বাসভবন ছেড়ে ঢাকা চলে যান। যাওয়ার আগে নিয়মমাফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে যান।
এ বিষয়ে ট্রেজারার বলেন, নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে তার বাসভবনের সামনে এসে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। তাদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদানে ভিসির প্রতি চাপ দিয়ে আসছিলেন। দাবি মানতে বাধ্য করতে কয়েকজন আন্দোলনকারী বাসভবনের প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। অবস্থার অবনতি হলে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মঙ্গলবার বেশকিছু পাশ করে যাওয়া ছাত্র নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে তার বাসভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন। কিন্তু তিনি ভার্চুয়ালি বোর্ড মিটিং করায় তাদের সাথে কথা বলতে পারেননি। এরই মধ্যে বেশকিছু ছাত্র প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অকথ্য ভাষায় চেঁচামেচি শুরু করে ও শ্লোগান দেয়।
ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, তারা নাকি চাকরি চাচ্ছেন। এখন তো আর চাকরি দেওয়ার সময় নাই। তাছাড়া এখন এডহক ও মাস্টাররোল এমনকি আউটসোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া আমারও সময় শেষ হয়ে এসেছে, কিভাবে আমি তাদের চাকরি দেব।
তিনি বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরবর্তী ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেবেন।
ভিসি জানান, নিয়মের বাইরে চাকরি দিতে আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম কাঠামোর বাইরে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।
হাবিপ্রবি’র বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেমের চার বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ জানুয়ারি।