ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪১ জন কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন পেলেও নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সমর্থন নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। এতে প্রায়ই ঘটছে সংঘাত। তবে মঙ্গলবার রাতে পাঠানটুলীতে প্রাণহানির পর এবার কঠোর হতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে কোনো মতভেদ না থাকলেও নগর নেতাদের বিরোধের জের প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে কাউন্সিলর পদে। মনোনীতদের অধিকাংশই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসাবে পরিচিত। অপরদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহ করা কাউন্সিলর প্রার্থীরা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের সমর্থনপুষ্ট বলে অভিযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রামের সনাক সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী বলেন, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী যারা ছিল, এখন যারা মনোনয়ন পাননি তারাই বরং দুঃসাহসী হয়ে, দুর্বীনিতি হয়ে সরকারি দলের প্রার্থী ও তাদের লোকজনকে হত্যা করেছে। বাকিরাও এই প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ফরিদ মাহমুদ বলেন, কেউ কেউ হয়ত বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থন পাচ্ছেন, কারও কারও সমর্থন পাচ্ছেন, নেপথ্যে হয়ত পাচ্ছেন। সে কারণে তারা নির্বাচন করার সাহস পাচ্ছেন।
প্রতিদিনই কোনো না কোনো ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ঘটছে সংঘাতের ঘটনা। এ অবস্থায় সংঘাতপ্রবণ এলাকাগুলোতে কঠোর হতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, যেখানে দলগুলোর মধ্যে সমান শক্তি আছে, সেখানে উত্তেজনা থাকে। সে বিষয়গুলো আমরা মনিটরিং করছি।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে নগরীর পাঠানটুলী এলাকায় নির্বাচনী সংঘাতে প্রাণহানির পর কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সিএমপির উপ-কমিশনার ফারুক উল হক বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে আচমকা একটা সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে। সংঘাতের পর পুলিশের উপস্থিতিতে সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।
সিএমপির উপ কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, কে বিদ্রোহী কে দলীয় এটা আমাদের বিষয় নয়, বিষয়টি হচ্ছে যে কোনো লোক এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফৌজদারি অপরাধে যুক্ত হবে বা লিপ্ত হবে তার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হচ্ছে, হবে আর চলতে থাকবে।
আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৭, কাউন্সিলর পদে ১৭২ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।