ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ ভারতের মাটিতেই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন। ক'দিন আগে আইসিসি কড়া ভাষায় চিঠি দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআইকে জানিয়েছে, কর মওকুফ না করলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সরিয়ে নেয়া হবে। এমন জটিলতায় বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে বসছে বিসিসিআইয়ের সাধারণ বার্ষিক সভা। আলোচনা হবে বিশ্বকাপ নিয়ে আইসিসির হুঁশিয়ারির বিষয়ে। সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আইপিএলে ১০ দলের অংশগ্রহণের ব্যাপারে।
দেড় বছর আগে সময় সংবাদে কড়া হুঁশিয়ারি জানিয়েছিলেন তৎকালীন আইসিসি'র প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। বলেছিলেন, কর মওকুফ না করলে ২০২১ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারত থেকে সরিয়ে নেবে আইসিসি। আশা করছি বিসিসিআই এ ব্যাপারে দ্রুত একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।
ঝামেলার এখনো সুষ্ঠু সমাধান করতে পারেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তাই তো এবার আরো ক্ষুব্ধ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা-আইসিসি। বিসিসিআইকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত সরকার কর মওকুফ না করলে ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি। তাই এবার বিসিসিআই আগে থেকে কর মওকুফের নিশ্চয়তা না দিলে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত থেকে সরিয়ে দুবাই নেয়া হবে।
ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই। আইসিসি'র আয়ের প্রধান উৎস হলো এই ভারত। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সাথে আইসিসির সুসম্পর্ক। কিন্তু সম্পর্কের ফাটল ধরে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ভারত সরকার ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাছ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার কর আদায় করে। যদিও, আসরের আগে বিসিসিআই, আইসিসিকে আস্বস্ত্ব করেছিলো, কর মওকুফ করা হবে যথাসময়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কথা রাখেনি। তাই আহমেদাবাদের সভায় সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু হবে ভারতে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে।
এই জটিলতা ছাড়াও, ক্রিকেট বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে আলোচিত ইস্যু, বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির আচরণে ক্ষুদ্ধ বোর্ডের অনেক সদস্য। বিসিসিআই সভাপতি হয়ে কয়েকটি বিজ্ঞাপনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়া, বোর্ডের স্বার্থবিরোধী কাজ বলেই মনে করেন তারা। যে কারণে ক্ষোভে ফুঁসছেন বোর্ড সদস্যরা। তাই বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রশ্নে বানে ভেসে যেতে পারেন প্রিন্স অফ কলকাতা।
গেল বছরের অক্টোবরে বিসিআইয়ের সভাপতি হওয়ার পর, গেল ১৪ মাসে বেশ কয়েকটি বিতর্কিক ঘটনায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতের সাবেক এই অধিনায়কের বিরুদ্ধে। মাঠের খেলার পর মাঠের বাইরেও সাংগঠনিক দুরদর্শিতার প্রমাণ রেখেছেন সৌরভ। কিন্তু এবার টেবিলের জটিল খেলায় ডাক করবেন নাকি ডাউন দ্য উইকেটে ব্যাট চালাবেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
সভায় আরো গুরুত্ব পাবে আইপিএলে দল বাড়ানোর বিষয়টি। ৮ দলের এই টুর্নামেন্টকে আগামীতে ১০ দলের আসরে পরিণত করতে চায় বোর্ড। যদিও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়াটা বেশ কঠিন হবে বিসিসিআইয়ের জন্য। কারণ ৮ দলের আসরে প্রায় দুই মাসে হয় ৬০টি ম্যাচ। ১০ দলের হলে ম্যাচ হবে ৯০টি। আসর শেষ করতে সময় লাগবে আড়াই মাস।