জাতীয় পতাকা বিকৃত করে বিজয় দিবস উদযাপনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। জাতীয় পতাকার নির্দিষ্ট মাপ ও ডিজাইন বিকৃত করে সবুজের মধ্যে লাল বৃত্তের পরিবর্তে পতাকার মাঝে চার কোণা আকৃতির লাল বর্গসংবলিত পতাকা নিয়ে বিজয় দিবস উদযাপনের অভিযোগ উঠেছে বেরোবি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
বিজয় দিবসে নিজেদের মতো করে তৈরি করা জাতীয় পতাকা নিয়ে ক্যাম্পাসে তোলা ছবি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই সব শিক্ষক। এ শিক্ষকদের এমন কর্মকাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর নির্দেশে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকাকে অবমানার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। জাতীয় পতাকার ডিজাইন পরিবর্তন করে ক্যাম্পাসে ওড়ানো হয়েছে ওই পতাকা। জাতীয় পতাকা আইন অনুযায়ী এটা অপরাধ। কী উদ্দেশ্য, কারা পতাকার ডিজাইন পরিবর্তন করল তা তদন্তের দাবিও জানিয়েছে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ।
অন্যদিকে জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।
ছবিতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান, বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শামীম হোসাইন, ইতিহাসের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী, মার্কেটিং বিভাগের সহকারি অধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাসুদুল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রাম প্রসাদ, সহকারী অধ্যাপক কাইয়ুম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বাসক রহমতউল্লাহ তাদের মতো করে বানানো পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন।
তাদের ওই ছবিসহ নিজের ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন শিক্ষক। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন- আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত, কারণ তারা সবাই 'শিক্ষক'!
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্র জাতীয় পতাকার আকৃতি পরিবর্তনের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে অনেকেই তাদের তীব্র সমালোচনা করেন কমেন্ট বক্সে।
তবে বিকৃত পতাকা নিয়ে বিজয় দিবসে অংশগ্রহণ করা শিক্ষকরা দাবি করেন, পতাকাটা কে এনেছে সেটাও তারা জানেন না। ছবি তোলার জন্য ডেকেছে এ জন্য তারা গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। পতাকার দিকে খেয়াল করেননি।