যুগের পর যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় গানই যাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন করোনায় বিপর্যস্ত তাদের জীবন জীবিকা। শেকড়ের সংস্কৃতি ধরে রাখা অসহায়-দুঃস্থ মানুষগুলো পান না সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা। অসচ্ছল সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে সচ্ছলরা ভাতা পেলেও বঞ্চিত ভাগ্যহত মানুষগুলো।
পৃথিবীর রূপ-সৌন্দর্য উপভোগ করতে না পারার যন্ত্রণা এভাবেই গানে প্রকাশ করেন জন্মান্ধ সন্তোষ বর্মণ। মানুষের কাছে শুনে শুনে মুখস্থ করা আড়াইশ গান পথে-ঘাটে গেয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন গাইবান্ধা সদরের ভূমিহীন এই বয়াতি।
তার মতো গানই যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন তাদের সবই তছনছ করেছে করোনার থাবা।
বাউল সন্তোষ বর্মণ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাওয়ার আমার উদ্দেশ্য পরিবার নিয়ে ভালো ভাবে কাটাতে পারি। আর্থিকভাবে সহযোগিতা যেন পাই তার কাছ থেকে।
বয়াতি আব্দুল কাফি বলেন, মায়ের কাছে আমার একটা আবেদন যদি এই আস্তানার দিকে লক্ষ্য করতো।
সংস্কৃতিকর্মীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীদের মাসিক কল্যাণ ভাতার তালিকায় দুস্থ শিল্পীদের নাম না থাকলেও সেই ভাতা নিচ্ছে সরকারি চাকরিজীবী এমনকি বিত্তবানরাও।
গাইবান্ধা উদীচীর সভাপতি জহুরুল কাইয়ুম বলেন, তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাইবান্ধা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, যারা দুস্থ শিল্পী হিসেবে ভাতা পাচ্ছেন, তাদের অনেকেই কিন্তু দুস্থ শিল্পীর ভাতা পাওয়ার কথা নয়।
তবে অসহায় দুঃস্থ বাউল শিল্পী ও বয়াতিদের সহায়তার আশ্বাস দিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন। তিনি বলেন, তারা আমাদের কাছে আসলে আমরা আমাদের মত চেষ্টা করবো সাহায্য করতে।
জেলা কালচারাল অফিসারের তথ্য মতে, জেলায় বাউল-বয়াতির সংখ্যা ৮৩ জন। আর শিল্পীদের একটি ডাটাবেজের কাজ চলছে।