বগুড়ার ধুনট উপজেলায় অপহরণের পর ধর্ষণের শিকার হয় এক স্কুল ছাত্রী। এ ঘটনায় শনিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ধুনট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বগুড়া সদর এলাকা অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবুকে (৪৫) গ্রেফতার করছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ফজলুল হক বাবু গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য এবং একই ইউনিয়নের দেউরিয়া গ্রামের মৃত সামছুল হকের ছেলে।
এর আগে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকার হেমায়েত পুর এলাকা থেকে একই মামলার ৪নং আসামী ধুনট উপজেলার গোপালগর ইউনিয়নের দেউড়িয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে আ. মান্নান (৪০) ও একই গ্রামের রিপন মিয়ার স্ত্রী সাথী খাতুনকে (৩৬) গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে টানা এক মাস আটকে রেখে আলোচিত এই ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী মাসুদ রানা (৩৬) এখনও পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, ধুনট উপজেলার দেউড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (৩৬) একই গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে গোপালনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে গত ১৬ জুলাই রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ওই মেয়েটিকে এক মাসেরও বেশি সময় একটা ঘরে আটকে রেখে ঘুমের ঔষধ খাওয়াইয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে মাসুদ রানা। তার এ কাজে সহযোগিতা করেছেন গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলুল হক বাবুসহ কয়েকজন সহযোগী।
এ ঘটনায় গত ১২ আগস্ট ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক মাসুদ রানা ও গোপালনগর ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবুসহ ৭ জনকে আসামী করে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর গত ২৪ আগস্ট ওই স্কুল ছাত্রীকে সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় ধর্ষক মাসুদ রানা ও তার সহযোগীরা। পরে পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলে।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, মেয়েকে অপহরণের পর গ্রামের মাতব্বররা বৈঠক করে আমাদের একঘরে করে রেখেছেন। আমাদেরকে গ্রামের কোনো বাড়িতে যেতে দেয়া হয় না। গ্রামের কোনো মানুষ আমাদের বাড়িতে আসে না। গত কোরবানির দিন (১ আগস্ট) আমাদেরকে মাংস দেয়া হয়নি। তবে হাট-বাজার কিংবা ফসলের মাঠে যেতে কোনো বাধা নেই।
কিন্তু দীর্ঘদিনেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আহসানুল হক আসামীদের গ্রেফতার না করতে পারায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে ওসি সিন্দুবলা গ্রহণ করেন।
ওসি সিন্দুবলা জানান, তিনি তদন্তভার গ্রহণের পর চারজন আসামীর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।