দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একেতো চিনি বিক্রি নেই তার ওপর বেতন বন্ধ ৫ মাস। এরমধ্যে আখ মাড়াই বন্ধের দুঃসংবাদ বিপাকে ফেলেছে আখচাষিদের। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে দিশেহারা শ্রমিকরা। এ অবস্থায় দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকলের বকেয়া বেতন ভাতার দাবি ও মিল বন্ধের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে শ্রমিক কর্মচারীরা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আখ মাড়াই বন্ধের কথা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, কেউ চাকরি হারাবে না এবং মিলও বন্ধ হবে না।
১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সেতাবগঞ্জ চিনিকল ১৯৮২ সালে আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করে। মিল এবং ফার্ম এলাকাসহ সাড়ে ৩ হাজার ৮৬০ একর জমি নিয়ে মিলটিতে ৭ শ ৫০ জন শ্রমিক- কর্মচারী কর্মরত। চিনি ও খাদ্য কর্পোরেশনের চিঠির প্রক্ষিতে সেতাবগঞ্জ চিনিকলে এ মৌসুমে আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষণা করা হয়। হঠাৎ এমন দুঃসংবাদ।
মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে আখ চাষি ও শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে।
এক আখ চাষি বলেন, 'এই আখ কোথায় নিয়ে যাব? কি করব? আমরা তো ক্ষতিগ্রস্তের দিকে চলে যাচ্ছি। এই অর্থ দিয়ে আমাদের সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালাই। যদি এই অর্থ বন্ধ হয়ে যায় আমাদের পরিবার চলবে কিভাবে?'
শ্রমিক কর্মচারীরা বলছেন, বকেয়া পরিশোধসহ আখ মাড়াই বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে যাবেন তারা।
চিঠির কথা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, মিল বন্ধ হবে না, কেউ চাকরি হারাবে না।
সেতাগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জাকির হোসেন বলেন, 'আমরা যেসকল জায়গা থেকে আখ ক্রয় করে থাকি সেসব জায়গা থেকে আখ ক্রয় করা হবে। এটার অন্য কোনো সমস্যা নাই। তবে, মিলের কাছে শ্রমিকদের পাঁচ মাসে বেতন পাওনা আছে। এটা মিলের ফান্ডে এখন নাই। সরকার কিংবা সদর দপ্তর টাকা দিলে আমরা পরিশোধ করতে পারব।'
সেতাবগঞ্জ চিনিকলে চলতি মৌসুমে ৪৫ হাজার মেট্রি টন আখ উৎপাদন হয়েছে। আর অবিক্রিত চিনি রয়েছে ২৪ শ মেট্রিক টন । যার আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি টাকা।