করোনা মহামারির কারণে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে ঐতিহ্যবাহী ‘নৌকা বন্দনা’ উৎসব পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নৌকার কারিগর ও বিক্রেতারা। নৌকা বিক্রি কমে যাওয়ায় সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন বহু ব্যবসায়ী।
রাস্তার পাশের ছোট্ট খুপড়ি দোকানে বসে বসে ছোট ছোট এসব বাহারি নৌকা তৈরি করেন কারিগররা। শিল্পীর সুনিপুণ হাতে বৈচিত্র্যময় নৌকায় ফুটে ওঠে রংবেরঙের কারুকাজ আর নকশা। ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় ভুবনেশ্বর শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা মেলে এ দৃশ্য।
হিন্দু দিনপঞ্জিকা মতে প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমায় ‘বইঠা বন্দনা উৎসব পালন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত এসে পাড়ি জমায় ভুবনেশ্বর শহরের লেকের ধারে। পানিতে ক্ষুদ্র নৌকা, আগরবাতি ও মোমবাতি ভাসিয়ে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে দিনটি উদযাপন করেন তারা।
তবে, করোনা মহামারির কারণে এবার উৎসব আয়োজনে ভুবনেশ্বর প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ক্ষতির সম্মুখীন এসব নৌকা তৈরির কারিগর ও শিল্পীরা। কেবল এই উৎসবের জন্যই সারা বছর অপেক্ষায় থাকতেন তারা। উৎসব বাতিল হওয়ায় নৌকা বিক্রি একেবার তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্ষুদ্র নৌকা বিক্রেতারা।
এক কারিগর জানান, কোভিড ১৯ সবাইকে হতাশ করেছে। কোনো ক্রেতা না থাকায়, আমরা ব্যবসা করতে পারছি না। সরকার জনগণকে কোভিডের নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি এই উৎসব পালনেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদেরকে।
তবে, লোকসান হলেও দেশের কল্যাণের কথা ভেবে অনেকেই আবার মেনে নিয়েছেন এমন সিদ্ধান্ত।
আরকে কারিগর জানান, করোনা মহামারির কারণে এ বছর আমি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু এই নিয়মকানুনগুলো না মেনেও কোনও উপায় নেই। দেশের কল্যাণের জন্য এটুকু আমাদের মানতেই হবে।
এদিকে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও একে কেন্দ্র করে জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত সরকার।