দূর থেকে দেখে মনে হবে জমিতে পানি সেচের জন্য তৈরি করা শ্যালো মেশিন কিংবা গভীর নলকূপের ঘর। তবে কাছে গিয়ে দেখা যায়, সেই ছোট ঘরে এক ব্যতিক্রম পরিবারের বসবাস। নিজের জায়গা-জমি কিছু না থাকায় স্থানীয় এক ব্যক্তির গভীর নলকূপের ঘরের পাশে খড়কুটো দিয়ে তৈরি করা ছোট ঘরে বসবাস করে হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া ইউনিয়নের শাল্টিমুরাদপুর এলাকায়। ডিজিটাল যুগেও এমন মানবেতর জীবন যাপন! স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কিছুই জানে না। খোলা মাঠ চারপাশে শুধু ফসলের জমি আর জমি। সেখানেই একটি গভীর নলকূপের সঙ্গেই খড়কুটো দিয়ে ছোট্ট একটি ঘর তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে হাসিনা নামে এক নারী। সেই ঘরে থাকে স্বামী ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক সন্তান। সেখানে নেই রাস্তাঘাট, নেই পানির ব্যবস্থা, নেই বিদ্যুৎ।
আরও পড়ুন: সেই স্বপ্নার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী
কথা হয় হাসিনার সাথে। তিনি বলেন, আমর স্বামী একজন দিনমজুর। দিন আনি দিন খাই। নিজের জায়গা জমি কিছুই নেই, নেই কোনো বাড়ি ঘর। একটা ছোট ঘরে থাকি। একদিকে সাপ ও পোকামাকড়ের ভয়, অন্যদিকে রাস্তাঘাট কিছু নেই। পানি হলে ঘর থেকে বের হতে পারি না। খাবার পানি আনতে যেতে হয় অনেক দূর। রাতের বেলা অন্ধকারে থাকতে হয়, অনেক কষ্ট করে আছি। ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে অনেক কষ্টে থাকি। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাকে একটু জায়গাসহ নিরাপদ একটি থাকার ব্যবস্থা করে দিলে আমি উপকৃত হব।
স্থানীয় রোকনুজ্জামান বলেন, তারা অনেক কষ্টে থাকেন। রাতের অন্ধকারে খোলা মাঠের মাঝে থাকা আসলেই একটি কষ্টের বিষয়। তাদের শুধু থাকা নয় বরং সব দিক দিয়েই তারা কষ্ট ভোগ করে। স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির কাছে দাবি জানাচ্ছি তাদের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য।
ভাদুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসমান জামিল জানান, আমার কাছে তো তারা আসেননি। আর আমি জানি না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাদেরকে আমার কাছে আসতে বলেন। তাদের যদি ঘর না থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্প রয়েছে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন্নাহার বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।