শিক্ষার্থীদের নোবেল খ্যাত হাল্ট প্রাইজের শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) হাল্ট প্রাইজ অর্গানাইজেশন অন-ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইন প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড সম্পন্ন হয়েছে। ফাইনালে ৮টি টিমের মধ্যে ‘টিম আপলোডিয়ান’ (Team Uploadian) চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরবর্তী আঞ্চলিক রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। দ্বিতীয় বারের মতো এই প্রতিযোগিতা শেকৃবি ক্যম্পাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের প্রতিযোগিতার মূল মন্ত্র ‘ফুড ফর গুড’।
প্রতিযোগিতায় ৪১টি টিম রেজিস্ট্রেন করে। যার মধ্যে ৮টি টিম ফাইনাল রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হয়। ফাইনালে অংশগ্রহণ করা টিমগুলো ছিল, ‘অ্যাওয়াক এগ্রোফিলিক ইম্প্যাক্টর্স’ (Awake Agrophilic Impactors), ‘টিম আপলোডিং’ (Team Uploadion), ‘এগ্রি ওয়েভার’ (Agri Waver), ‘ম্যাজিক মিল’ (Magic Meal), ‘বুল’স আই’ (Bull’s Eye), ‘টিম গ্যাম্বিট’ (Team Gambit), ‘স্টাইকার’ (Strikers) এবং ‘লেটবি’ (Latebee).
উল্লেখ্য, হাল্ট প্রাইজকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবসায় উদ্যোগ প্রতিযোগিতা। যৌথভাবে এর আয়োজন করে জাতিসংঘ ও বিল ক্লিনটন ফাউন্ডেশন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আহ্বানে প্রতিবছর বহু শিক্ষার্থী একটি নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই প্রতিযোগিতার সুবাদে। বিজয়ী দলকে দেওয়া হয় বাংলাদেশি মূল্যে সাড়ে ৮ কোটি টাকা বা (১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার). এবছর করোনা মহামারির কারনে সব ধরনের প্রতিযোগিতা ডিজিটাল প্লাটফর্মে সম্পন্ন করা হয়। সেই অনুযায়ী ফাইলান রাউন্ড এর সকল কার্যক্রম ডিজিটালি অনলাইন প্লাটফর্মে সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ফাইনাল রাউন্ড এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শেকৃবির ফাইনাল রাউন্ডে প্রধান অতিথি হিসেবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহিদুর রশিদ ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, সম্মানিত অতিথি হিসেব ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আরিফ হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
বিচারক হিসেবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের এগ্রি এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আলম, বহুব্রীহি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সহপ্রতিষ্ঠাতা গালিব হাসান খান, বাংলাদেশ ওয়াধানি ফাইন্ডেশন’ (Bangladesh Wadhani Foundation) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার এস্তানুল কবির এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস ম্যনেজমেন্ট অনুষদের এগ্রবিজনেস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম শাওন উপস্থিত ছিলেন।
ফাইনালে ৮টি টিমের বিজনেস আইডিয়া প্রেজেন্টেশন দেওয়ার পর বিচারকদের রায়ে টিম আপলোডিয়ানকে চ্যম্পিয়ন ঘোষনা করা হয়। ১ম রানার আপ হিসেবে টিম বুল’স আই এবং ২য় রানারআপ হিসেবে টিম অ্যাওয়াক এগ্রোফিলিক ইমপ্যাক্টকে নির্বাচিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.নজরুল ইসলাম বলেন, এরকম প্রতিযোগিতা আরো বেশি করে করে আয়োজন করা দরকার যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে পারে পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের জন্য। আমি আশাবাদ যে আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজয়ী হয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য সুনাম বয়ে আনবে।
গেস্ট অব অনার আরিফ হেসাইন বলেন, ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ এমন একটি অনুষ্ঠানের সাথে কাজ করতে পেরে খুবই আনন্দিত। এবং বিজয়ী দলের জন্য আমরা মেন্টরিং টিম দিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী। আমরা সামনে তরুণদের নিয়ে কাজ করার জন্য ইয়ং প্রফেশনাল গ্রুপ তৈরি করব যাতে তরুণদের নিয়ে কাজ করা যায়।
বিজয়ী দলের সদস্য সাফিন রাভি বলেন, অনেক কষ্টের ফসল আমাদের আজকের অর্জন। আমি শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাই যারা আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে সাহায্য করেছেন। আমি আশা করি আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম উজ্জ্বল করব।
শেকৃবি অন ক্যম্পাস প্রোগ্রাম সফল করার জন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল ‘সময় টিভি’। এছাড়াও স্ট্র্যটেজিক পার্টনার হিসেবে ‘ইএমকে সেন্টার’, ই-লার্নিং পার্টনার হিসেবে ‘বহুব্রীহি’ এবং গুড ফুড পার্টনার হিসেবে ‘গ্রিনিকালচার’ ও টাইটেল পার্টনার হিসেবে ছিল ‘ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ’।
শেকৃবি অন ক্যম্পাস প্রতিযোগিতার ক্যম্পাস ডাইরেক্টর রিফাতুল ইসলাম সকল বিচারক ও গেস্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে এবারের অন ক্যম্পাস রাউন্ডের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।