দেশের বিভিন্ন জায়গাতে একযোগে বেতন বৈষম্য নিরসন ও টেকনিক্যাল গ্রেডের দাবিতে অষ্টম দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) অষ্টম দিনের মতো তারা নিজ নিজ কর্মস্থলের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন।
টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সকাল ১০টা থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। এতে বিভিন্ন উপজেলা ইউনিয়নে টিকাদান কর্মসূচিসহ মা ও শিশুরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ সময় আন্দোলনকারীরা জানান, ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। আবার ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেওয়ার পরেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাবি আদায়ের লক্ষে গত ২৬ তারিখ থেকে দেশে একযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্টেন্ট অ্যাসোসিয়েশন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, টাঙ্গাইল সদর স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ মো. মোতালেব হোসেন, সদর উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানসহ সব স্বাস্থ্য সহকারী। এ সময় আন্দোলনকারীরা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে একই দাবিতে বাগেরহাটেও কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা জড়ো হয়ে এ কর্মবিরতি পালন করছেন। এ সময় নিজেদের ৭ দফা দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। কর্মবিরতিতে ব্যাহত হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাগেরহাট সদর উপজেলা শাখার আয়োজনে এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। এ সময় বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন বাগেরহাট সদর উপজেলা শাখার সভাপিত মো. আরাফাত শেখ, সাধারণ সম্পাদক এসএম রবিউল আলম, স্বাস্থ্য সহকারী সাইফুন নাহার, সঞ্জয় শিকদার, নাসরিন খানম, নুরুন্নাহারসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বাগেরহাটের সব উপজেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন।
বক্তারা বলেন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে জেলায় এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের এক মহাসমাবেশে আমাদের (স্বাস্থ্য সহকারী) বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে ২ জানুয়ারি তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেন। এ ছাড়া চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আমরা হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন বর্জন করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালক আমাদের দাবি মেনে নিয়ে লিখিত সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেন। সে অনুযায়ী আমরা এখনো কোনো সুবিধা পাইনি। আমাদের এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন চাই।
এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন উপজেলাতে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।