বগুড়ার ধুনটে এক কিশোরীকে অপহরণ করে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আহসানুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গত তিন মাসের বেশি সময়েও তিনি আসামি ধরতে পারেননি। এ ছাড়া তিনি আসামিদের পক্ষ নিয়ে মামলার বাদীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানাগেছে, ধুনট উপজেলার গোপাল নগরে মাসুদ নামের এক যুবক ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত ১৬ জুলাই ওই কিশোরী তার নানার বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যাওয়ার সময় তাকে অপহরণ করেন মাসুদ রানা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলু। পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করার পর গত ১২ আগস্ট মাসুদ রানা, ইউপি সদস্য ফজলুসহ ৫ জনের নামে ধুনট থানায় অপহরণ মামলা হয়। কিন্তু পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করতে পারেনি। ঘটনার এক মাস ৯ দিন পর কিশোরীর বাবা সিরাজগঞ্জ শহরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর ওই কিশোরী জানায় তাকে ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করানোর পর অভিযুক্তরা প্রায় এক মাস ধরে ধর্ষণ করেছে।
ওই কিশোরীর মা জানান, মেয়েকে ফেরত পাওয়ার পর থেকেই স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান, বর্তমান চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিলে এই মামলা মীমাংসা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। তারা আপস না করায় সামাজিকভাবে একঘরে করে রাখা হয় তাদের পরিবারকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি বারবার জানানোর পরেও তিনি আসামিদের পক্ষ নিয়ে বাদীকে গালিগালাজ করেন। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই আপস করতে রাজি হন তারা। সেই অনুযায়ী আসামিরা বাদীকে বগুড়া শহরে নিয়ে গিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। এ ছাড়া মেয়ের বিয়ের সময় দেড় লাখ টাকা দিতে চায়। এদিকে মামলার তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করতে গেলে শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানকে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মামলার বাদী।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বগুড়ার পুলিশ সুপারের আদেশে মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) রাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আহসানুল হককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।