ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ের ডবল লাইন প্রকল্পের কাজে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে। গত ২০১৬ সাল থেকে লাকসাম-আখাউড়া রেললাইন ডুয়েল গেজ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে সালদা নদী এলাকা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ এবং উচ্ছেদ অভিযানে জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান আখাউড়া রেলওয়ে জংশন এলাকার লালবাজার অংশে অন্তত ৪০ বছর ধরে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে অন্তত ১৮টি পরিবার বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি সময়ে রেলওয়ে ডবল লাইন সম্প্রসারণের জন্য উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়ার পাশাপাশি নির্মিত স্থাপনার ক্ষতিপূরণের আশ্বাস প্রদান করে কার্ড দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার আগে সম্প্রতি এলাকায় উচ্ছেদের মাকিং হওয়ায় আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন রেললাইনের পাশের বাসিন্দারা।
তারা জানান রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে। ক্ষতিপূরণের কার্ডও তারা দিয়েছেন। তবে ক্ষতিপূরণের অর্থ এখনো তারা পাননি। অর্থ পাওয়ার আগে এলাকায় মাইকিং করায় একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্ষতিপূরণের অর্থ পেলে তারা বসতি ছেড়ে স্বেচ্ছায় অন্যত্র চলে যাবেন।
লালবাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক মিয়া বলেন, এ জমির প্রকৃত মালিক আমরা তাই টাকা আমরা পাব। কিন্তু তারা জমির কোনো কাগজপত্র দেখতে চায়নি। তাদের প্রকল্পে ক্ষতি হচ্ছে বলে আমাদের উচ্ছেদ করতে চায়। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই। প্রকৃতভাবে ক্ষতিপূরণ দিলে আমরাও এ প্রকল্পের কাজে সহযোগিতা করতে চাই।
একই এলাকার হাসিনা আক্তার বলেন, প্রতিদিন এসে আমাদের ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে যায়। শুধু বলে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ ক্ষতিপূরণ দেবে তাও কিছু বলে না। আমাদের কোনো কথা শুনতে তারা রাজি না। শুধু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়।
আরেক বাসিন্দা জয়ফুল বেগম বলেন, আমরা গরিব-অসহায়, আমাদের কোনো জায়গা-জমি নেই। আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করি। আমাদের যদি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় তাহলে আমরা চলে যাব।
এদিকে লাকসাম-আখাউড়া ডবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক রমজান আলী জানান, ক্ষতিপূরণ দিয়েই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন এলাকার দখলদাররা বিএসএ রেকর্ডে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করেছে। পাশপাশি উচ্চ আদালতে রিট করেছে। যার কারণে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে।
তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে জানান রেলওয়ে কর্মকর্তা।