চলতি সপ্তাহে ভাসানচরে শুরু হতে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেছে জাতিসংঘ। তাদের দাবি এ বিষয়ে তাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। এমনকি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে তারা। বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে এক আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত জানান, জাতিসংঘের মূল্যায়নের পর তারা এ বিষয়ে মতামত জানাবে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের এই দৃষ্টিভঙ্গি দুঃখজনক।
২০১৭ সালের আগস্টে দেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর বেশ কয়েক দফা চেষ্টা করা হয় তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে। সে চেষ্টা এখন পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখেনি। রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে নতুন করে ভাসানচর প্রস্তুত করা হলেও সেখানেও বাধ সাধছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বেশ কয়েকবার তারিখ দিয়েও শুরু করা যায় নি তাদের নিয়ে যাওয়া।
তবে নিজের অবস্থানে অনঢ় সরকার চলতি সপ্তাহে শুরু করতে যাচ্ছে স্থানান্তর প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় আজ বুধবার জাতিসংঘের পাঠানো এক বিবৃতিতে উদ্ভট অভিযোগ করে সংস্থাটি বলছে, এ প্রক্রিয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করেনি বাংলাদেশ সরকার। স্থানান্তরের ক্ষেত্রে নানা শর্তও জুড়ে দেয় তারা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে যা বলল জাতিসংঘ
এদিকে দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ডিক্যাব টকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত জানান, জাতিসংঘের ভূমিকার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তিয়ারিং বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে জাতিসংঘের কারিগরদল যে রিপোর্ট দেবে সেটার দিকে তাকিয়ে আছি। তাদের রির্পোটের পর আমাদের মতামত জানাবো। তবে, এই প্রক্রিয়াটি নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় হতে হবে।
এক্ষেত্রে, জাতিসংঘের ভূমিকার সমালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন যখন সীমান্তে বাবা-মার কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া সন্তানকে আলাদা করেছিলো তখন নিশ্চুপ ছিল তারা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যার্বতন শুরু করতে মিয়ানমারকে পর্যাপ্ত চাপ দিতে ব্যর্থ হলেও ভাসানচর ইস্যুতে জাতিসংঘ প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন তারা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের দূরভিসন্ধি লক্ষ্য করছি। তারা কিন্তু রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় না।
চলতি সপ্তাহে ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার।