বারবার ধর্না দিয়েও দেশি মিলের চিনি কিনতে টিসিবিকে রাজি করাতে পারেনি শিল্প মন্ত্রণালয়। অথচ সরকারি প্রয়োজনে বাধ্যতামূলকভাবে দেশীয় পণ্য ক্রয়ে রয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন বলছে, টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রির সুযোগ মিললে কিছুটা হলেও কমতো লোকসান। টিসিবি'র দাবি, চিনি ক্রয়ে দরপত্রের নিয়ম ভাঙার কোন সুযোগ নেই।
লাগামহীন খরচ, বিপরীতে সীমিত উৎপাদন, প্রতিদিনই বাড়ছে শ্রমিক কর্মচারীর বকেয়া আর ব্যাংকের দেনা। এমন চতুর্মুখী সংকটে বিপর্যস্ত সরকারি ১৫ চিনিকল। যেখান থেকে উত্তরণে চিনি বিক্রি বাড়ানোর সঙ্গে অল্প কিছু পণ্য উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ শিল্প মন্ত্রণালয়।
তবে বছরজুড়ে ভর্তুকি দিয়ে চিনি বিক্রি করলেও সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবি কেনে না আখের লাল চিনি। এমন অভিযোগ তৃণমূলে। যা স্বীকার করে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন বলছে, বারবার অনুরোধের পরও মন গলেনি টিসিবির।
একজন বলেন, মিলের চিনি গুদামে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই চিনিগুলো যদি টিসিবির মাধ্যমে দিতো, তাহলে আমাদের চিনি বিক্রিতে কোন সমস্যা থাকতো না।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের সচিব কৃষিবিদ মো. আব্দুল ওয়াহাব বলেন, টিসিবিও আমাদের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে বাজারজাত করতে পারতো। কিন্তু টিসিবিকেও আমরা বরাদ্দের বিষয়ে অনেক বার চিঠি দিয়ে বলেছি, তারা আমাদের কথা আমলে নেয়নি।
কার্যকর হচ্ছে না সরকারি চাহিদা পূরণে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনাও, এমন দাবি শিল্প মন্ত্রণালয়ের।
এ বিষয়ে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোও আমাদের কাছ থেকে চিনি ক্রয় করে না। যদিও প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে একটি নির্দেশনাও দিয়েছেন, এরপরও কেনো মন্ত্রণালয়গুলো ক্রয় করছে না, সেটা তাদের ব্যাপার।
যদিও টিসিবি বলছে, দরপত্র অনুযায়ী সর্বনিম্ন দামেই চিনি কেনে প্রতিষ্ঠানটি।
টিসিবি’র মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির জানান, চিনি শিল্প করপোরেশন নিজেরাই তো বিক্রি করার জন্য যথেষ্ট। যদি মিলগেট মূল্যের চেয়ে আমাদের কম পড়ে তখন আমাদের টেন্ডার থেকে নিতে হয়।
তবে নতুন মাড়াই মৌসুম থেকেই সবগুলো মিলেই চিনির সঙ্গে বহুমুখী পণ্য উৎপাদনে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।