ঢাকার সদরঘাট কোতোয়ালি ও ওয়াইজঘাট এলাকার ত্রাস দুই ভাই মিঠু-পাপন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা সম্রাটের অপরাধ সাম্রাজ্য কায়েম করে রেখেছেন স্থানীয় এই দুই নেতা। তবে পুলিশের নথিপত্রে তাদের বিরুদ্ধে নেই কোনও মামলা মোকাদ্দমা।
পুরান ঢাকার কোতোয়ালির মিঠু, পাপন সহোদর এক আতঙ্কের নাম। পাপন ৩৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আর বড় ভাই মিঠু থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। সদরঘাট থেকে ওয়াইজঘাটে ফুটপাতে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছেন ত্রাসের রাজত্ব। সিমসন রোডের সাউথ সিটি প্লাজার আন্ডার গ্রাউন্ডে নিয়মিত জুয়ার আসর বসলেও এখন স্পট পরিবর্তন করে ভাসমান লঞ্চে চলছে তাদের অপকর্ম।
টাকার বিনিময়ে যুবলীগের পদ ভাগিয়ে পাপন মিঠু ওয়াইজঘাট কোতোয়ালিতে গড়ে তুলেছেন অপরাধ সাম্রাজ্য। ক্যাসিনো ডন সম্রাটের সঙ্গে ছিল তার সখ্যতা। চা দোকানি থেকে শুরু করে ফল বিক্রেতা কেউই রেহাই পাননি দুই ভাইয়ের নির্যাতনের হাত থেকে।
এক দোকানি বলেন, আমার কাছে একবার ২০ হাজার টাকা চেয়েছিল। দিতে রাজি হয়নি বলে আমাকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে গণধর্ষণের আসামিদের ডিএনএ মিলেছে
মিঠু পাপনের নির্যাতনের শিকার আওয়ামী লীগ ও ঘাট শ্রমিক লীগ নেতারাও। তাদের মধ্যে একজন বলেন, তারা এখন বর্তমানে সদরঘাটের ত্রাস। তাদের কারণে আওয়ামী লীগ সেখানে নাই বলতে গেলেই চলে।
এসব অপকর্মের মুলহোতা স্থানীয় ব্যবসায়ী তেল কামাল ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রহমান মিয়াজী। তবে মিয়াজী নিজেও এখন অনেকটা কোণঠাসা তাদের ত্রাসের রাজত্বে। যদিও এসব মানতে নারাজ অভিযুক্ত কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সদস্য জাবেদ হোসেন মিঠু। তিনি বলেন, আমরা বিরুদ্ধে যারা এই ধরনের কথা বলছে, এসব ভিত্তিহীন।
এতকিছুর পরেও পুলিশ বলছে, তাদের কাছে কোনও অভিযোগ নেই। অথচ কোতোয়ালি থানায় মিঠুর বিরুদ্ধে রয়েছে জিডি। এ বিষয়ে লালবাগ জোনের এডিসি কোতোয়ালি মুহিত সেরনিয়াত বলেন, থানায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ এই ধরনের কোনও অভিযোগ নেই। তবে কেউ যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করে, তাহলে মামলা নিতে আমাদের দেরি হবে না।
এদিকে ঘটনার সতত্য পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। তিনি জানান, যদি নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা তদন্ত টিম গঠন করে বিচার বিশ্লেষণ করে সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
বছর কয়েক আগে ও যারা ঘাট শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তাদের নামে ওয়ইজঘাটে বিভিন্ন মার্কেটে দোকান, কেরানীগঞ্জে পাঁচতলা বাড়ি, রয়েছে গাড়ি, যাত্রাবাড়িতে আছে আবাসিক হোটেল।