মানিকগঞ্জের শিবালয়ে প্রেমঘটিত বিষয়ের জেরে ঢাকার কলেজছাত্র মো. তানভীর আহাম্মদ জিসানকে হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) আসামিদের ১০ দিন রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত তিন আসামীর দুইদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন।
নিহত জিসান ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ এলাকার শাহিন আলমের ছেলে এবং মোহাম্মদপুর হাজী মুকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শিবালয় উপজেলার পাচুরিয়া এলাকার জুলহাসের ছেলে রাব্বি হোসেন ওরফে প্রান্তিক , ছোট শাকরাইল এলাকার ঝাড়ু মোল্লার ছেলে নাজমুল, সমেজ মোল্লার ছেলে শরিফ হোসেন, জামাল মোল্লার ছেলে আজিজুল এবং ঢাকাইজুড়া এলাকার শামীম হাসানের ছেলে হাসিবুন হাসান।
পুলিশ জানায়, চলতি নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখে জিসান ঢাকা থেকে নানা বাড়ি যাবার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। জিসানের পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করেন। এদিকে গত ১৮ তারিখে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে পদ্মায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে জিসানের পরিবার ওই যুবকের জামা-কাপড় দেখে তাকে শনাক্ত করে। পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর পুলিশ শিবালয় থানায় বিষয়টি অবগত করে। এ ঘটনায় শিবালয় থানা পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের আটক করতে সক্ষম হয়।
শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা জানান, প্রধান আসামি রাব্বির সাথে এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়ের সাথে দেখা করতে ঢাকায় আসলে জিসানের কয়েক বন্ধু ঢাকা থেকে রাব্বির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অপমান করে। এরপর থেকে রাব্বি প্রতিশোধ নেবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।
জিসান পূর্ব পরিচিত থাকার সুবাদে রাব্বি সুযোগ খুঁজছিল। জিসানের প্রেমিকার নানীর বাড়ি শিবালয়ের ছোট শাকরাইল এলাকায় থাকায় তাকে দেখা করতে খবর দেয় রাব্বি। চলতি মাসের ১৫ তারিখে রাতে সিজান গাড়িযোগে পাটুরিয়া ঘাটে এসে নামে।
এসময় রাব্বিসহ পাঁচ বন্ধু মিলে তাকে পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালের কাছে নদীর চরে নিয়ে রশি দিয়ে হাত বেঁধে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে জিসানকে। ৩২টি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জিসানের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের শুক্রবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। এতে আদালত দুইজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়ে বাকি তিন আসামিকে দুইদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন।