‘মাদককে না বলি, ক্রীড়াকে হ্যাঁ বলি, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ি’ এই স্লোগানে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ৮নং দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঐতিহ্যবাহী রশিটান খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে খেলা উপলক্ষে ওই বিদ্যালয় মাঠে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। এতে ৫ থেকে ৭ হাজার লোকের সমাগম ঘটে।
ঐতিহ্যবাহী এ রশিটান খেলার ফাইনাল খেলা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ৮নং দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামেদুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, খেলা দেখতে আশেপাশের গ্রামগুলোর বাড়িতে সকাল থেকে আত্মীয়-স্বজন এসে অপেক্ষায় থাকেন। দুপুর থেকে সব বয়সী দর্শকের গন্তব্যস্থল হয়ে কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ।
সাইকেল, রিক্সা-ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দর্শকদের সমাগম ঘটে। দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোদা,আটোয়ারী ও ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য দর্শক ঐতিহ্যবাহী রশিটান খেলা দেখতে কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভিড় জমান। দর্শক সমাগমে যেন ওই মাঠে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
দেবীগঞ্জ উপজেলার ৮নং দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ ‘বঙ্গবন্ধু যুব উন্নয়ন ক্লাব’ এ রশিটান খেলার আয়োজন করে। এবার ছিল প্রথম আয়োজন।
রশিটান খেলায় আটটি দল অংশ নেয়। রেফারি আবু সাঈদের বাঁশিতে যখন খেলা শুরু হয় তখন উপস্থিত দর্শকরা হাততালি ও চিৎকার চেঁচামেচি করে উৎসাহ দিতে থাকেন। দর্শকদের হাততালির সঙ্গে খেলোয়াড়রা সমান তালে এগিয়ে যেতে থাকেন। খেলা শেষে রাতে প্রথম বিজয়ী একতা মোড় দলকে ২৪ ইঞ্চি এলইডি টিভি ও দ্বিতীয় বিজয়ী প্রেম বাজার দলকে ১৪ ইঞ্চি টেলিভিশন পুরস্কৃত করা হয়।
রশিটান খেলা দেখতে আসা পঞ্চগড় থেকে শেখ ফরিদ ও রিয়া জানান, রশিটান দেখে খুব মজা পেয়েছি। বিনোদনের ঐতিহ্যবাহী ও বিলুপ্তপ্রায় এ রশিটান খেলা নিয়মিত আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।
একই কথা জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলা থেকে রনি নিয়াজী।
কালীগঞ্জ ‘বঙ্গবন্ধু যুব উন্নয়ন ক্লাবের’ আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন সাজু ও সভাপতি সুজন প্রামাণিক জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী রশিটান প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলার ৮নং দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আমরা আরও ফিরে পেতে চাই। বাংলার যে ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো রয়েছে সেই খেলা আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। এই জন্য ৮নং দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।