ভারত জুড়ে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বামপন্থী দলগুলোর ডাকে ১২ ঘণ্টার হরতাল পালিত হচ্ছে। দেশটির রাজধানী দিল্লি ছাড়াও এই ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও।
ভয়ঙ্কর মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাংক, বীমা-রেল-খনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারিকরণ, কৃষক বিরোধী নীতির প্রতিবাদ, লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে মাসিক সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং মাথা পিছু দশ কেজি খাদ্য শস্যের দাবিতে এই ধর্মঘটে কংগ্রেস নৈতিক সমর্থন দিলেও বিজেপি-তৃণমূল এর বিরোধিতা করেছে।
বামপন্থী হরতাল সমর্থনকারীরা কোথাও কোথায় লাল ঝাণ্ডা হাতে নিয়ে বাজারের ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। কেউ রাস্তায় বসে গিয়ে কিংবা কেউ বাসের চালকের সামনে গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে প্রায় জোর করেই হরতাল পালনে বাধ্য করেছেন বলে চোখে পড়েছে এসব রাজ্যে।
১৬ বাম সংগঠনের ডাকা এই হরতালে বড় ধরনের কোনও সহিংসতার ঘটনা না ঘটলেও বেশ কিছু জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া- ভাঙচুর এবং লাঠিচার্জ এর মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বহু সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ প্রশাসন।
তবে ভারতে সবচেয়ে নজরকাড়া হরতাল পালনের ছবিটা দেখা গিয়েছে মমতার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে। কংগ্রেস বামদের ডাকা এই হরতালে সমর্থন করে পথে নামলেও মমতা প্রশাসন হরতাল রুখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও রাস্তায় অতিরিক্ত সরকারি বাস নামিয়েছে। তাই মোদীর সঙ্গে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন মমতাও।
কলকাতার নিউটাউনের একজন বামনেতা বলেছেন, মোদী-মমতার কৃষি বিরোধী চরিত্র প্রায় এক। তারা আম্বানী-আদানীকে সমর্থন করে, কৃষকদের নয়।
ওই নেতার দাবি করেন, পুলিশ হরতাল সমর্থনকারীদের লাঠিপেটা করেছে। তুলে নিয়েছে পুলিশ ভ্যানে। মমতার সরকার আর মাত্র ৫ মাস পর থাকবে না, তখন এই পুলিশ কী করবে এমন প্রশ্নও তোলেন ওই বাম নেতা।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২৩ জেলায় কমবেশি হরতালের প্রভাব পড়েছে। রাস্তায় বেসরকারি বাসসহ সাধারণ যানবাহন ছিল কম। বিমান বন্দরে বহু যাত্রীকে গণপরিবহনের জন্য লম্বা লাইন দিতে দেখা গিয়েছে।