নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে রাস্তা দখল করে গড়ে ওঠা হকারদের দোকানপাট, সিএনজি স্ট্যান্ড ও গণপরিবহনের টিকিট কাউন্টারসহ ১২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা শতাধিক দোকানপাট ও দুটি সিএনজি স্ট্যান্ডসহ ২০টি গণপরিবহনের অবৈধ কাউন্টার উচ্ছেদ করা হয়।
হাইওয়ে পুলিশের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে বেশ কয়েকজন হকার অবৈধ দখলের কথা স্বীকার করে নিজ থেকে তাদের স্থাপনা ও দোকানপাট সরিয়ে নেওয়া শুরু করেন। পরে হাইওয়ে পুলিশ একে একে উচ্ছেদ করতে থাকে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, অবৈধ দোকানপাট ও বিভিন্ন গণপরিবহনের টিকিট কাউন্টারগুলোর কারণে মহাসড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়ায় সর্বস্তরের মানুষ ও পথচারীদের চলাচলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি হচ্ছে। এ ছাড়া ফুটওভার ব্রিজের ওপর দুই পাশ হকাররা দখল করে বসায় চলাচলে প্রতিবন্ধকতাসহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিক্ষার্থী তরুণীদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট এসব হকারের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের জন্য পুনর্বাসনে সহায়তা করছে এবং মদদ দিচ্ছে। হকারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রাস্তায় বসার ব্যবস্থা করে দিয়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার উচ্ছেদের পরে তারাই আবার টাকা নিয়ে হকারদের পুনর্বাসন করে থাকে। হকারসহ অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ড ও দোকানপাটগুলো উচ্ছেদ করার পাশাপাশি পুনরায় যাতে বেদখল হয়ে না যায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার দাবি করছেন এলাকাবাসী।
উচ্ছেদ অভিযানের ব্যাপারে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান সময় নিউজকে জানান, 'মুজিববর্ষের অঙ্গীকার সড়ক ও জনপথ রাখব পরিষ্কার' এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাঁচপুর, মোগড়াপাড়া ও মেঘনা টোলপ্লাজা পর্যন্ত জনবহুল পয়েন্টগুলো যানজটমুক্ত রাখাসহ রাস্তার দু’পাশে সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত অটোরিকশা ও থ্রি হুইলার চলাচল রোধ করতে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিষিদ্ধ কোনো ধরনের অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে আমার কোনোভাবেই চলাচল করতে দেব না। পাশাপাশি উচ্ছেদকৃত জায়গায় পুনরায় যাতে হকাররা অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা গড়ে তুলতে না পারে সে জন্য কমিউনিটি পুলিশের কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তাদেরসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে হাইওয়ে পুলিশ বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে। একই সঙ্গে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান হাইওয়ে থানা পুলিশের এই কর্মকর্তা।