চট্টগ্রাম বন্দরে নিলামে ওঠা গাড়ির পাশাপাশি বিভিন্ন শেডে থাকা পণ্য কম দামে বিক্রির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র। কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে আস্থা অর্জন এবং বন্দরের অভ্যন্তরে ঢুকে পণ্য পছন্দের সুযোগ পাওয়ায় সাধারণ মানুষও বিভ্রান্তিতে পড়ে তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন। তবে কাস্টমসের অনুমতি ছাড়া এ ধরণের পণ্য বিক্রির কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি বন্দর কর্মকর্তাদের।
বন্দরের শেডে থাকা কাপড় কম দামে বিক্রির কথা বলে গাজীপুরের দুই তরুণের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কথিত কাস্টম কর্মকর্তা সানোয়ার ও তার সহযোগীরা। এমনকি বন্দরের ভেতরে ঢুকে তারা কাপড় বাছাইয়ের সুযোগও পেয়েছিলো।
একজন জানান, প্রতারক চক্র তাদের গেটের সামনে অবস্থান করতে বলেছিল। ৫টার দিকে তাদের হাতে মালামাল চলে আসার কথা। কিন্তু তা আর আসেনি।
আরেকজন জানান, তার কাছ থেকে টাকার নেয়ার সময় আস্থা অর্জনের জন্য তাকে ২ লাখ টাকার একটা চেক দিয়েছিল প্রতারক চক্র। যা ভুয়া ছিল।
শুধু এই দু তরুণই নয়। তাদের মতো অনেকেই বন্দরকেন্দ্রিক এই প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। ঢাকার এক ব্যবসায়ীকে (মোখলেসুর রহমান) বন্দরের শেড থেকে মসুর ডাল দেয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছে ২৩ লাখ টাকা।
সিআইডির অভিযানে বন্দরকেন্দ্রিক প্রতারক চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে একের পর এক অভিযোগ আসছে। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি মোংলা বন্দরেও এই প্রতারক চক্রের প্রভাব রয়েছে বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ।
তবে বন্দর কর্মকর্তাদের দাবি, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে বন্দর থেকে কোনো পণ্য বাইরে বিক্রি'র সুযোগ নেই। বর্তমানে অন্তত ৫টি সরকারি সংস্থা বন্দরের নিরাপত্তা তদারকি করছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, সারাদিনে ৬ থেকে ৭ হাজার লোক বন্দরে আসা-যাওয়া করে। এদের মধ্যে দুজন লোক আরেকজনকে দেখিয়ে যে বলবে এই মালামাল আপনি নিতে পারবেন। সেই সুযোগ নাই। কারণ, এখন অটোমেশনের আওতায় চলে এসেছে সবকিছু।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন শেডে আমদানিকারকদের ছাড় না করা মালামাল বছরের পর পর পড়ে থাকে। আর এসব পণ্যকেই পুঁজি করে গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ এই চক্র। সানোয়ার নামে এক ব্যক্তি এই চক্রের প্রধান বলে নিশ্চিত হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।