২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে আলোচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যা করে সৌদির একদল চৌকস ভাড়াটে খুনি। যুবরাজ সালমানের নির্দেশেই সাংবাদিক জামালকে হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।
যেদিন তুর্কি দূতাবাসে খাশোগি খুন হন, এর আগে ফোনে বহুবার হত্যার হুমকি পান। কিন্তু হুমকির এক পর্যায়ে একদিন খাশোগি কেঁদে দেন বলে জানিয়েছেন তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) তুরস্কের এক আদালতে এ তথ্য জানান জামাল খাশোগির ওই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তুর্কি আদালতে দেওয়া বক্তব্যে খাশোগির বন্ধু আইমান নূর বলেন, জামাল আমাকে জানান, ২০১৬ সাল থেকে কাহতানি তাকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। আইমান মিসরের একজন রাজনীতিবিদ, যার সঙ্গে জামাল খাশোগির ছিল দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব।
খাশোগিকে হুমকি দেওয়া সেই কর্মকর্তা হলেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা কাহতানি আল সৌদ।
আরো পড়ুন: ইরানে হামলার গোপন পরিকল্পনা ছিল যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের
হুমকিদাতা কাহতানি ফোনে তাকে বলেছিলন, ‘তিনি ও তার সন্তানরা কোথায় থাকে তা তারা জানে। এই কথা শোনা মাত্রই কেঁদে দেন জামাল।’
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, সৌদির প্রভাবশালী যুবরাজ সালমান এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেন। যদিও সৌদি কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পরপরই তাকে হত্যার পরই খাশোগির মরদেহ টুকরো টুকরো করে অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়। এখনও মরদেহের কোনো হদিস মেলেনি। তবে খাশোগি হত্যায় চলছে বিচারকাজ। সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের চিফ প্রসিকিউটর খাশোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত ৮ আটজনের চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা করে। এতে পাঁচজনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। একজনকে ১০ বছর, বাকি দুজনকে সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
আরো পড়ুন: যুবরাজ সালমান-নেতানিয়াহুর গোপন বৈঠক অস্বীকার সৌদির
চূড়ান্তভাবে অভিযুক্ত আটজন কিংবা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের কারও পরিচয়ই প্রকাশ করা হয়নি। তাই এখনও পর্যন্ত কেউ জানেই না আদতে কী তদন্ত হয়েছে, তদন্তে কী তথ্য পাওয়া গেছে, কারা জড়িত ছিল, কোন মাত্রায় জড়িত ছিল। এমনকি আদৌ কোনো তদন্ত হয়েছিল কিনা, সে সম্পর্কেও সবাই অন্ধকারেই রয়েছে।