রাজধানীর বায়ু দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরকে তা জানাতে হবে। আর বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে যাতে দূষণ না বাড়ে সে বিষয়েও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্টের দ্বৈত-বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশে আদালত রাজধানীর বায়ু দূষণ মাত্রার যেন অবনতি না হয়, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়।
চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি রিটের এক শুনানি শেষে বায়ু দুষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দেন আদালত। নির্দেশনার দফাগুলোতে আদালত বলেন,
১. ঢাকা শহরের মধ্যে যেসব ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনে বালি বা মাটি পরিবহন করা হয়, সেগুলো কাভার্ড (ঢাকনা) যুক্ত করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণ কাজ চলে সেসব স্থানে ঠিকাদারদের ঢাকনা দিয়ে নির্মাণ কাজ পরিচালনা করতে হবে।
৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনও পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিংয়ের যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির শর্ত মেনে করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. যেসব গাড়ির কলো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে হবে।
৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনও বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকলিং বন্ধ করার এবং
৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রেখে মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে তা অপসারণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো।
একই দিন আদালত নির্দেশনার পাশাপাশি, ঢাকায় বায়ু দূষণ কেন রোধ করা যাচ্ছে না এবং বায়ু দূষণ রোধে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে হাইকোর্টে তলব করেন। একই সঙ্গে ১ মার্চের মধ্যে সব বিবাদীকে নির্দেশনার ৯ দফা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) পরিবেশ অধিদফতর সেই প্রতিবেদন দাখিল করেন হাইকোর্টে। সেখানে হাইকোর্টের নির্দেশে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তার অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি।